দেড় যুগের প্রতিশ্রুতি,করা হয়নি স্থায়ী সমাধান

 

 

মনজু ইসলাম।। ভোলায় তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙন হুমকিতে রয়েছে ৩টি ওয়ার্ডে ৪টি গ্রাম। সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ৪,৫ ও ৬ নাম্বার ওয়ার্ডের তেতুলিয়া নদীর তীরবর্তী ৪টি গ্রাম। গেল দের যুগেরও বেশি সময় ধরে তেঁতুলিয়ার ভয়াল ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে বর্ষা মৌসুমে তীব্র ভাঙ্গনে ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে তেঁতুলিয়া।এতে করে হুমকির মুখে রয়েছে নদীর তীরবর্তী ৩টি ওয়ার্ড।ইতিমধ্যে তেঁতুলিয়ার ভাঙ্গনে বসতভিটা ও সহায় সম্পত্তি হারিয়ে ভেদুরিয়া ছেড়ে পাড়ি দিয়েছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।স্থানীয় বাসিন্দারা জানান,ভেদুরিয়ার ইউনিয়নের পাশেই বহমান তেতুলিয়া নদী।গত দের যুগ ধরে তেতুলিয়ার ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। দিনের-পর-দিন নদী ভাঙ্গনের কারণে বসতভিটা ফসলি জমিসহ সরকারি উন্নয়নমূলক প্রকল্প বিলীন হয়েছে তেতুলিয়ার গর্বে।নদী ভাঙ্গনের কবলে প্রচীনতম ভেদুরিয়া ইউনিয়নের উত্তর ভেদুরিয়া, চর ভেদুরিয়া, মধ্য ভেদুরিয়া এবং চর চটকিমারা এলাকা। চলতি বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তীব্র আকারে নদী ভাঙ্গন ভায়াবহ থেকে ভয়াল রুপ ধারণ করেছে। নদীর রাক্ষসী ছোবলে দিনের পর দিন এখানকার মানুষ হারাচ্ছে তাদের বসতভিটা ফসলি জমি। ভাঙ্গনের কবলে বসতভিটা, রাস্তাঘাট-ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা।তাদের সাথে কথা বলে যানাযায়, এরই মধ্যে গত ১৫ দিনে অর্ধশতাধিক বসতঘর ও ফসলি জমি বিলীন হয়েছে তেতুলিয়া গর্বে।বসতভিটা সহায়-সম্পত্তি হারিয়ে ইতিমধ্যে বেশ কয়েক হাজার পরিবার অসহায়ত্বের জীবন যাপন করছে।কেউ কেউ আবার নদীর গর্বে ভিটেমাটি হারিয়ে সরকারি রাস্তার টংঘর উত্তোলন করে বসবাস করছে।জমি কেনার সামর্থ্য না থাকায় কারো ঠাই মিলে বিত্তবানদের জায়গায়।এ অবস্থায় ভাঙ্গন বন্ধে সরকারের পদক্ষেপ গ্রহণ করার জোর দাবি জানান এলাকাবাসী।তবে ভোলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা থাকলেও তাদের তৎপরতা নেই বল্লেই চলে।আবার কেউ কেউ বলছেন,স্থানীয় এমপিরা নদী ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা বল্লেও বাস্তবে নেই কোন মিল। এ আসনে এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন দক্ষিণ বাংলার বিএনপি’র পরিচিত মুখ মরহুম মোশারেফ হোসেন শাহজাহান থেকে শুরু করে তরুণ জাতীয় রাজনীতিবিদ আন্দালিব রহমান পার্থ ও সাবেক সফল বাণিজ্যমন্ত্রী ও বর্তমান এমপি তোফায়েল আহমেদ।বর্ষিয়ান ও তরুণ নেতাদের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেও দের যুগেও তেতুলিয়া নদীর ভাঙ্গন রোধে গ্রহণ করা হয়নি স্থায়ী পদক্ষেপ। যার ফলে দিনের পর দিন তেতুলিয়া গর্বে বিলীন হয়েছে মানুষের বসতভিটা ফসলি জমিসহ সরকারের উন্নয়নমূলক পাকা রাস্তা, ব্রীজ, কালবাট, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ৪,৫,ও৬ নাম্বার ওয়ার্ডে ভেদুরিয়া লঞ্চঘাট সংলগ্ন মোল্লা বাড়ি থেকে শুরু হয়ে ব্যাংকেরহাট বাজার পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটারের অধিক এলাকা জুড়ে রয়েছে নদী ভাঙন। তীব্র ভয়াল নদী ভাঙ্গনে এ বছরের বর্ষা মৌসুমে ইতিমধ্যে শতাধি এরও অধিক ঘর-বাড়ি নদী গর্বে বিলীন হয়েছে।বর্তমানে ভাঙ্গন মুখে রয়েছে ৪টি গ্রামের অন্তত ৫ শতাধিক পরিবার। এতে করে হতাশা আর আতঙ্কের মধ্যে দিন পাড় করছে তেঁতুলিয়া পাড়ে শত শত মানুষ।ভাঙন কবলিত ৪টি গ্রামের মানুষ সহায় সম্বল হারিয়ে দুশ্চিন্তা আর সংকটের মধ্যে দিয়েই পাড় করছে দিন। নদীর ভয়াল এ রুপ দেখে অনেকেই সরিয়ে নিচ্ছে ঘর-বাড়ি।নদীর তীরের মানুষগুলো আতঙ্কগ্রস্ত হয়েই কাটাতে হয় নির্ঘুম রাত।এলাকাবাসী মনে করছেন, অতি তাড়াতাড়ি তেঁতুলিয়ার ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে নদীগর্বে বিলীন হবে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।

SHARE