জীবিকার তাগিদে করনা আতঙ্কের মধ্যেও ঢাকা ছুটলেন হাজারো পোশাক শ্রমিক

তাইফুর সরোয়ার-

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার আগেই হাজার হাজার মানুষ জীবিকার তাগিদে ঢাকায় প্রবেশ করেছেন। পরিবহন সেবা বন্ধ থাকায় অনেকেই হেঁটে এসেছেন।

গত ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ থাকা পোশাক কারখানা আজ রোববার (৫ এপ্রিল) খোলার কথা। সে জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় অবস্থান করা শ্রমিকেরা শনিবার সকাল থেকে শিল্পাঞ্চলে ফিরতে থাকেন। সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকলেও শ্রমিকেরা পণ্যবাহী ট্রাক, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, মাহেন্দ্রসহ ছোটখাটো গাড়িতে ৮/১০ গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে ফিরতে দেখা গেছে। মাওয়া ঘাটে দেখা গেছে যাত্রী বোঝাই ফেরি। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যে সামাজিক দূরত্বের কথা বলা হচ্ছে, সেখানে কেউ তার ধার ধারছিলেন না। অন্যদিকে মানুষের গাদাগাদি করে আসার দৃশ্য দেখে বুঝার উপায় ছিলো না যে করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী মানুষকে কতটা ভাবিয়ে তুলেছে।

ঢাকা ময়মিনসিংহ ও ঢাকা টাঙ্গাইল পথেও দেখা গিয়েছে উপচে পড়া ভিড়। কর্মস্থলে ফিরতে হবে কর্তৃপক্ষের এমন নির্দেশনার পর শুধু পেটের দায়েই তারা বিকল্প পথে রওনা হয়েছিলেন ঢাকার পথে। কোন যানবাহন না পেয়ে অনেকেই ১০/১২ কিঃমিঃ পথ পায়ে হেটে এসেছেন নিজ গন্তব্যে।

এদিকে করনা পরিস্থিতিতে কারখানা খোলা রাখার বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি। সংগঠনটি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শনিবার বলেছেন, “বিশেষ অবস্থায় কারখানা খোলা রাখা এবং যাতায়াত ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার উদ্যোগ না নিয়ে সরকার এবং মালিকপক্ষ এক অমানবিক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এটি কোনোভাবেই দায়িত্বশীলতার পরিচায়ক নয়”।

সরকার গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। পরে এ ছুটির মেয়াদ ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হলেও পোশাক কারখানার জন্য ছিল না সুনির্দিষ্ট কোন নির্দেশনা।করোনাভাইরাসে ছড়িয়ে পড়া রোধে অন্তত দুই সপ্তাহ সবাইকে বাড়িতে রাখতে ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে সরকারের এই পদক্ষেপ। এ সময়কালে জনসমাগম তো দূরে কথা, বিনা প্রয়োজনে বাড়ির বাইরেও যাতে মানুষ বের না হয়, এ জন্য মাঠে নামানো হয়েছে সেনা। চলছে প্রশাসন ও পুলিশের সমন্বিত সচেতনতা কার্যক্রম ও অভিযান।

উল্লেখ্য রাত পৌনে দশটার দিকে বিভিন্ন মহলের সমালোচনায় গতকাল শনিবার বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক সাংবাদিকদের মাধ্যমে সদস্য কারখানা মালিকদের বলেন, ‘‌‌’সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত কারখানা বন্ধ রাখতে সব কারখানার মালিক ভাই ও বোনদের বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।”

SHARE