ভোলার শিবপুরে স্কুল শিক্ষকের নামে ‘জেলে কার্ড’!

 

টিপু সুলতান: নদী-সাগরে জীবনে কখনো মাছ শিকার করেননি। কিন্ত তিনি নিবন্ধিত জেলে। আছে জেলে কার্ড। কার্ডের কারণে প্রতি বছর জেলে হিসেবে পান খাদ্য সহায়তা। এমন এক কথিত জেলের নাম ইয়ার হোসেন। তিনি ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মো. দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। তিনি রতনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।

জেলেরা অভিযোগ করে জানান, ব্যবসায়ী, কৃষক, শ্রমিক ও স্বচ্ছল ব্যক্তিরা জেলে কার্ডধারী। মৃত কিংবা পেশা পরিবর্তনকারীরাও জেলে। কিন্তু প্রকৃত ও নতুন জেলেরা তালিকায় নেই। জেলেদের তথ্য মতে তালিকায় ভুয়া জেলে রয়েছে কয়েক হাজার, আবার প্রকৃত জেলেও বাদ পড়েছেন কয়েক হাজার।

সচেতন মহলের মতে, জেলে কার্ডের মাধ্যমে সরকারি সহায়তা প্রাপ্তদের মধ্যেও হাজার হাজার কার্ডধারী রয়েছে যারা জেলে না। প্রতি বছর তালিকা আপডেট করলে ভুয়া জেলে কমে যাবে এবং প্রকৃত জেলেরা তালিকা ভুক্ত হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইয়ার হোসেন একজন আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। সে সুবাধে প্রভাব দেখিয়ে টাকা দিয়ে সে নিজের নামে জেলে কার্ড করে নিয়েছেন। আজ ৫ বছর ধরে তিনি নিয়মিত সরকারি জেলে চাল পাচ্ছেন।

এদিকে স্কুল শিক্ষকের নামে জেলে কার্ড রয়েছে এমন সংবাদ শিবপুর ইউনিয়নে ছড়িয়ে পড়লে ইউনিয়ন জুড়ে শুরু হয় চাঞ্চল্য। ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন প্রকৃত জেলেরা। তাদের দাবি, এই অনিয়মের সঙ্গে জেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তারা জড়িত।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষক ইয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি ভোলা নিউজের কাছে এ বিষয়ে কোনো কথাই বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা মৎস্য অফিসের এক ব্যক্তি বলেন, ইয়ার হোসেনের মতো এমন সহস্র ব্যক্তির নামে জেলে কার্ড রয়েছে। যাঁরা প্রকৃত জেলে না। জেলা ও উপজেলা মৎস্য অফিসের মাধ্যমে এসব জেলে কার্ড টাকার বিনিময়ে করানো হয় বলেও তিনি জানান।

এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, অভিযুক্ত ইয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিভাবে তিনি একজন শিক্ষক হয়েও জেলে কার্ড করেছেন তা খতিয়ে দেখে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, এই বিষয়টি তাঁর নজরে ছিল না। তিনি খুব দ্রুতই ইয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে ব্যবস্থা নিবেন।

ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান

SHARE