ভোলায় সংখ্যালগুর উপর হামলা ও হত্যাচেষ্টায় নের্তৃত্ব দেন কাউন্সিলর সোহাগ।।

 

ভোলা প্রতিনিধি॥ ভোলায় মাদকসেবী বখাটে স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের মামলায় স্বাক্ষী হওয়ায় ভিক্টিমের ভাই “নিলু মন্ডল”কে থানার সামনেই বেধড়ক পিটিয়ে জখম করেছে আসামীরা। বোরহানউদ্দিন পৌর ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সোহাগের নের্তৃত্বে ক্যাডাররা হত্যাচেষ্টা ও এ হামলার ঘটনা ঘটায়। গত শুক্রবার
(১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার থানা পুলিশ কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত নিলুমন্ডলকে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত “নিলুমন্ডল”গণমাধ্যমকে জানান,তার মাদকসেবী ভগ্নিপতি “অনির্বাণ শুকান্ত” ছোট বোন “ইস্মিতা রানী” মন্ডলকে যৌতুক ও নেশার টাকার জন্য প্রায়সময়-ই মারধর করে। সর্বশেষ বিগত ২১আগষ্ট প্রথমে জেলা সদর ভোলার পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডস্থ বিএভিএস সড়কে অবস্থিত ভিক্টিমের ভাড়া করা ফ্ল্যাটে এবং ২৪ আগষ্ট দ্বিতীয়বার হামলা ও নিপীড়নের ঘটনাটি ঘটানো হয় বোরহানউদ্দিন উপজেলাধীন পক্ষিয়া ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ডস্থ্য তাদের গ্রামে বাবা’র বসতবাড়ীতে। বখাটে স্বামী শুকান্তের হামলায় আহত বোন ইস্মিতাকে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো।তিনি জানান, দুই পূত্র সন্তানের জননী বোন ইস্মিতারানী মন্ডল বোরহানউদ্দিন উপজেলায় “পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে” চাকুরী করছেন। জেলা সদর ভোলায় সন্তানদের পড়ালেখা করানোর সুবাদে তার বোন ভাড়া করা ফ্ল্যাটে বসবাস করেন। বিয়ের পর বোনের স্বামী অনির্বাণ টুকটাক ব্যবসা-বাণিজ্য করলেও নেশাগ্রস্থ্য হওয়ায় এখন তিনি বেকার হয়ে মাতলামী করছেন। ফলে ইস্মিতার চাকুরীর টাকায়-ই তাদের সংসার চলে। বিয়ের পর থেকে স্বামী শুকান্ত শশুর বাড়ী হতে যৌতুক হিসেবে কয়েক লাখ টাকা নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। কাজকর্ম না করে ওই টাকা নেশার পিছনে ব্যায় করে ফের টাকা চাইতে শুরু করেন। এভাবে টাকা না পেলে তার বোন ইস্মিতাকে প্রায় সময়-ই নির্মমভাবে নিপীড়ন চালায় শুকান্ত। স্ত্রী’র কাছ থেকে নেশার টাকা আদায় করতে পারলে তা নিয়ে এক-দেড়মাসের জন্য উধাও হয়ে যান শুকান্ত। কিছুদিন পর ফিরে এসে আবার তার বোনের উপর হামলা শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় ২১ আগষ্ট সন্ধ্যায় ভোলা জেলা শহরের ভাড়া বাসায় এসে নেশার টাকার জন্য স্ত্রী ইস্মিতার উপর হামলা চালায় স্বামী শুকান্ত। স্বামীর টর্চার সইতে না পেরে স্ত্রী ইস্মিতা নিজেকে রক্ষা করতে ওই দিনই বোরহানউদ্দিনের নিজ গ্রাম পক্ষিয়ায় বাবার বাড়ীতে গিয়ে আশ্রয় নেন। কিন্তু সেখানে গিয়েও রক্ষা পাননি ছোট বোন ইস্মিতা। ২৪ আগষ্ট বিকেলে বখাটে স্বামী-শুকান্ত ৩/৪ জন ভাড়াটে গুন্ডা বাহিনী নিয়ে ইস্মিতার বাবার বাড়িতে হামলা চালায়। সেখানে ইস্মিতার উপর ফের নির্যাতন চালানো হয়। মাস্তান দিয়ে ইস্মিতাকে টেনেহিঁচড়ে অপহরনের চেষ্টা চালায় শুকান্ত। এসময় তার বোনের ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে শুকান্তসহ দূর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর আহত ইস্মিতাকে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো। আহত নিলুমন্ডল বলেন, আমার বোন তার স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে গত (২৯ আগষ্ট) মঙ্গলবার ভগ্নিপতি অনির্বাণসহ ঘটনায় জড়িতদের আসামী করে ভোলার নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল বিচারিক হাকিমের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। বোনের দায়ের করা ওই মামলায় আমি স্বাক্ষী হই। দায়েরকৃত মামলাটি এফ.আই.আর হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে বিজ্ঞ বিচারক আনোয়ারুল হক বোরহানউদ্দিন থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। শুক্রবার (১সেপ্টেম্বর)সকালে সেই মামলার খোঁজ-খবর নিতে বোরহানউদ্দিন থানার গেটের কাছাকাছি আসলে, স্থানীয় পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সোহাগের নের্তৃত্বে মামলার আসামী শুকান্ত,তার সেকেন্ড ইন কমান্ড আবু কালাম,ভগ্নিপতি মনজয় সরকার’সহ ৫/৬ জনের দূর্বৃত্ত লোহার রড ও লাঠিসোটা দ্বারা আমাকে এলোপাথারী পেটাতে থাকে। তারা আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ক্যাডারদের হামলায় আমি গুরুতর আহত হওয়ার এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে পথচারীরা আমাকে এ্যাম্বুলেন্সযোগে ভোলা সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন। থানার সামনে মামলার স্বাক্ষীর উপর এমন বর্বোরচিত নিপীড়নের ঘটনা সম্পর্কে জানতে কথা হয় বোরহানউদ্দিন থানার তৎসময়ের ডিউটি অফিসার মেহদী হাসানের সাথে। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন,থানার সামনে এমন ঘটনার কথা তিনি শুনেননি, কোনো পুলিশ সদস্যগণও তা দেখেননি। তাই খোঁজ না নিয়ে আগাম কিছুই বলা যাচ্ছেনা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল। এ বিষয়ে অভিযুক্ত কাউন্সিলর মোঃ সোহাগ মিয়ার সাথে গণমাধ্যমকর্মীরা যোগাযোগ করলে তিনি এঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেন। একটি গ্রুপ তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে বলেও দাবী করেন তিনি। অভিযুক্ত অপর ব্যক্তি অনির্বান সুকান্ত’র সাথে তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি গণমাধ্যমের কল রিসিভ করেননি।

ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান

SHARE