কোকেন মামলায় সাক্ষী দিলেন ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদ আলম

 

চট্টগ্রাম বন্দরে আটক হওয়া ১০৭ ড্রাম সূর্যমূখী তেলের সাথে তরল কোকেন মিশ্রিত করে আনা আলোচিত কোকেন মামলায় সাক্ষী দিলেন তৎকালীন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো.ফরিদ আলম। সোমবার (৭  ফেব্রুয়ারি) অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ  শরীফুল আলম ভূঁইয়ার  আদালতে তিনি এই সাক্ষ্য প্রদান করেন। আদালতের ব্রাঞ্চ সহকারী ওমর ফারুক ভোলা নিউজকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়,  ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল বাংলাদেশ পুলিশের সিআইডিকে জানায় যে, বলিভিয়া থেকে একটি কন্টেইনারে তরল কোকেন পাচার হচ্ছে। তৎকালীন সিআইডি প্রধান জাবেদ পাটোয়ারীর উপস্থিতিতে উক্ত কন্টেইনার সনাক্ত করে পুলিশ, কাস্টমস, বন্দর কতৃপক্ষ, নৌবাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে উক্ত কন্টেইনার সনাক্ত করে আলামত জব্দ করে নৌবাহিনীর ল্যাবে আলামত পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করা হয়। এর মধ্যে এ বিষয়ে বন্দর থানায় পুলিশ একটি জিডি করে। কাস্টমস ইন্টেলিজেন্স ৩ জন আসামিকে আটক করে। পরবর্তীতে রিপোর্ট আসে উক্ত তেলের ড্রামে কোকেনের অস্তিত্ব নেই। আসামীর জামিন শুনানীতে তৎকালীন ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদ আলম উক্ত রিপোর্ট ও ওই প্যাটার্নে হওয়া মামলা গ্রহন করলেন না। তিনি আদেশ করলেন যেহেতু আমলযোগ্য অপরাধের সংবাদ পাওয়া, আলামত উদ্ধার, আসামী আটক থাকার পরেও কেন এজাহার হয়নি এবং এই কারনে কেন ওসির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে না সে বিষয়ে শোকজ করেন। একি সাথে ২৪ ঘন্টার মধ্যে নিয়মিত মামলা দায়ের করার নির্দেশ দেন। এভাবেই জন্ম হয় বহুল আলোচিত ও বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সাড়ে নয় হাজার কোটি টাকার কোকেন মামলার। কোকেন মামলা শুরু থেকে আলামত জব্দ করা, তদন্ত কাজ সহ প্রতি স্তরের কাজে নানা প্রতিকুলতা পার করে।

এই মামলার তদন্তকালে আলামত জব্দ করে বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সেস ড্রাগ এন্ড ফুড টেস্টিং ল্যাব, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও সিআইডি তথা তিন সংস্থার কাছে আলামতের তিন সেট প্রেরন করা হয় এবং তিনটি সংস্থার রিপোর্টে কোকেনের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। এই মামলার তদন্তকালে প্রতি পদে পদে বাধা ডিঙ্গাতে তৎকালীন ম্যাজিস্ট্রেট জনাব ফরিদ আলম প্রায় ৩৬টি চৌকস আদেশ প্রদান করেন। তৎকালীন সময়ে মামলাটির ব্যাপারে মিডিয়া অত্যন্ত বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। পরবর্তীতে এই আলামতগুলো ধংস্ব করা হয়। আদালত, র‌্যাব, পুলিশ, কাস্টমস বিভাগসহ সকল সংস্থার বলিষ্ঠ পদক্ষেপে এই পর্যন্ত গড়িয়ে বর্তমান সময়ে মামলাটি৷ আন্তর্জাতিক চোরা চালানের মধ্যমে আনা কোকেন আটকে দেয়া সম্ভব হয়েছে আদালত সহ সকল সংস্থার সমন্বিত প্রচেষ্টার কারনে। এই মামলায় ৩ জন আসামীর ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী রেকর্ড করেন জনাব ফরিদ আলম। আজ তার সাক্ষ্য প্রদানের মাধ্যমে কোকেন মামলার বিচারের কাজ আরো একধাপ এগিয়ে গেলো।

SHARE