প্রথম স্কুল অচেনা লাগছিল

 

টিপু সুলতান ঃ অচেনা লাগারই কথা।দেড় বছর পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে। প্রথম প্রথম একটু আধটু অস্বস্তি লাগবে, সাপ্তাখানিক পর আবার আগের মতন চেনারুপে হয়ে যাবে।আজ ১২.৯.২১ ইং সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী খুলেছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ দেড় বছর পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা গেছে উচ্ছ্বাস ও আনন্দ। তাদের সবার মুখে মাস্ক থাকলেও স্কুলের গেটের বাইরে মানছে না সামাজিক দূরত্ব। একে অপরকে জড়িয়ে ধরে উল্লাস করছে। রোববার ভোলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লক্ষ্য করা যায় এমন চিত্র। সকাল ৭টা থেকেই স্কুল ব্যাগ কাঁধে স্কুল কলেজের সামনে ভিড় করছেন শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা। বন্ধুদের দেখে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন। চোখে-মুখে ছিল তাদের বাঁধভাঙা আনন্দ।স্কুলের প্রবেশমুখে শিক্ষার্থীদের থার্মাল দিয়ে মাপা হচ্ছে তাপমাত্রা। একটু ভিতরে যেতে না যেতে শিক্ষার্থীদের ফুল, বাদ্যযন্ত্র ও গানের মাধ্যমে সুস্বাগতম জানাচ্ছেন স্কুল কর্তপক্ষ। ক্লাসরুমে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে পাঠদান। এক বেঞ্চে দুইজন করে শিক্ষার্থী বসিয়ে ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষকরা। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সিয়াম আহমেদ বলেন, এতদিন পরে ক্লাস করতে পেরে খুবই আনন্দিত। এতদিন বাসায় বসে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছিলাম। পড়াশোনায়ও ওইভাবে মন বসেনি কখনও। অনলাইন ক্লাস করে খুব একটা সন্তুষ্টি ছিলাম না। আবার আগের মতো পড়াশোনায় মনোযোগী হতে পারবো। অনেকদিন পর স্যার ও বন্ধুদের দেখে ভালো ই লাগছে। স্কুলটিকে প্রথমে অচেনা লেগেছিল। এখন ক্লাস করে অনেক ভালো লাগছে। পূর্বের ক্লাসরুমের স্মৃতি মনে পড়ে যাচ্ছে।
দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, সন্তানকে আবার আগের পরিবেশে আনতে একটু সময় লাগবে। বাসায় বসে বাচ্চারা খুব একটা পড়াশোনা করেনি। অলস হয়ে গেছে। সকালে ঘুম থেকে শুধু উঠাতে বিশ মিনিট সময় লেগেছে। আগে যেখানে পাঁচ মিনিট লাগতো। যতই কষ্ট হোক আবার স্কুলমুখী হওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। আগের স্কুলের কোন পরিবেশ দেখা যাচ্ছে না। কিছুদিন পরেই তো পরীক্ষা। যতদিন সময় আছে নিয়মিত ক্লাস করাতে হবে।ভোলা সরকারি স্কুলের শিক্ষক সফিক আহম্মদে বলেন , দুইটা শিফটে ক্লাস নেয়া হচ্ছে। সরকারি নিদর্শনা অনুযায়ী আজ আমাদের স্কুলে দশম ও পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে। একটি শিফটে ৪০ মিনিট করে ক্লাস হবে। সব মিলিয়ে আমাদের ১১শ’ শিক্ষার্থী। আজ ৫০ শতাংশের মতো শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি আশা করছি। সকাল সাতটা থেকে প্রতিদিন ক্লাস শুরু হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের সবধরনের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করেছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হচ্ছে। দীর্ঘদিন পর স্কুলের যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হচ্ছে স্কুলের চারপাশ। আজ আমরা আনন্দিত।

SHARE