আফগানিস্তানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী কে এই হাসান আখুন্দ!

 

ভোলা নিউজ ডেস্ক ঃ মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ’কে প্রধানমন্ত্রী করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করেছে তালেবানরা। গ্রুপটির সিনিয়র নেতাদের সমন্বয়ে যে সরকার মঙ্গলবার দিনশেষে ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে কোনো নারীর স্থান নেই। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক কৌতুহল ছিল গত ১৫ই আগস্ট থেকে। অবশেষে নানা জল্পনার অবসান ঘটিয়ে সরকার গঠনের ঘোষণা দেন তালেবান মুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তালেবানদের নতুন শাসনে নেতৃত্বে থাকা কে এই মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ- এ সম্পর্কে জানার কৌতুহল সবার। এ বিষয়ে পাকিস্তান থেকে প্রকাশিত অনলাইন এক্সপ্রেস ট্রিবিউন লিখেছে, হাসান আখুন্দ কান্দাহার প্রদেশের। এই প্রদেশটি হলো তালেবান আন্দোলনের জন্মভূমি। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানদের যে সরকার ক্ষমতায় ছিল তাতে তিনি পালন করেছেন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী, উপপ্রধানমন্ত্রী এবং কান্দাহারের গভর্নরের দায়িত্ব।তিনি তালেবান আন্দোলনের সহপ্রতিষ্ঠাতা। তালেবান প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত মোল্লা ওমরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন হাসান আখুন্দ। আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা লাভ করেছেন তিনি। হাসান আখুন্দের বয়স ৬০-এর দশকের মাঝামাঝি বলে মনে করা হয়। তবে তার চেয়েও বেশি হতে পারে তার বয়স। অন্যদিকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন তার বিরুদ্ধে যে অবরোধ ঘোষণা করেছে তাতে, তাকে ৭৬ বছর বয়সী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।তালেবানের সিদ্ধান্ত গ্রহণের শক্তিশালী পরিষদ রেহবারি শুরা বা নেতৃত্ব বিষয়ক পরিষদের প্রধান হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করছেন হাসান আখুন্দ। বিশ্লেষকরা তাকে একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে দেখে থাকেন। তার রয়েছে রেহবারি শুরা’র ওপর নিয়ন্ত্রণ। সামরিক বিষয়েও তার সিদ্ধান্ত দেয়ার এক্তিয়ার আছে।
ওদিকে তালেবানের একটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, হাসান আখুন্দের বয়স অনেক বেশি। তালেবানের সিনিয়র নেতৃত্বের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে বেশি বয়সী। তালেবানের আন্দোলনে আর্থিক এবং লজিস্টিক সাপোর্ট দিয়ে থাকেন তিনিই। এ ছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও পাকিস্তানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছেন তিনি।
তার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের এক অবরোধ বিষয়ক রিপোর্টে তাকে বর্ণনা করা হয়েছে মোল্লা ওমরের একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও রাজনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে। তাছাড়া তালেবানদের মধ্যে হাসান আখুন্দকে খুব সম্মান দেখানো হয়। তিনি তালেবান সুপ্রিম নেতা হায়বাতুল্লাহ আখুন্দজাদা’র খুব ঘনিষ্ঠ। টেলিফোনে তালেবানদের সিনিয়র নেতা আহমেদজাই বলেছেন, তালেবান নেতা মোল্লা মানসুরকে হত্যা করার পর তাকে গ্রুপটির প্রধান হওয়ার জন্য কয়েক ডজন বার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু এ প্রস্তাব তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। এ জন্য সর্বসম্মতিক্রমে আখুন্দজাদাকে তালেবানদের আমীর নির্বাচিত করা হয়।
এছাড়া তালেবান শাসনামলে বুরহানুদ্দিন রাব্বানি যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন তার খুব ঘনিষ্ঠ একজন সহযোগী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন হাসান আখুন্দ। তালেবান এক নেতা বলেছেন, রেববারি শুরা’তে সব সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে আখুন্দ-এর প্রভাব রয়েছে। নওয়াজ শরীফ যখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এবং সারতাজ আজিজ যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী তখন তিনি পাকিস্তান সফর করেছেন।

SHARE