সাগরে ৬৫ দিনের অভিযানে পরিবার নিয়ে চিন্তিত ভোলার জেলেরা

মোঃআল-আমিন ঃ আজ মধ্য রাত থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ ঘোষণ হয়েছে। এতে বিপাকে পরেছে ভোলার জেলেরা। চরফ্যাশন বেতুয়াঘাটের নাছির মাঝি নামে এক জেলে বলেন, অভিযান চলাকালিন সরকার আমাগো জন্য যা বরাদ্ধ দেয় তা সব উপরের মানুষেরাই পায়! আমাদের কাছে আসতে আসতে প্রায় সব শেষ হয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, এর আগে নদীতে ২ মাসের অভিযান ছিলো। তখন আমারা মাছ ধরি নাই। এখন নদীতে যাই। কিন্তু মাছ পাইনা। এমনকি মাছ ধরার খরচের টাকাও ওঠে না। এখন মাছের আশায় সাগোরে জামু তাও দিছে আবার দুই মাসের অভিযান। এই অভিযানে অভিযানেই আমাগো মাছ ধরার সময় শেষ হইয়া যায়। মাছ আর আমগো কপালে থাকে না । এখন কিস্তির টাকা দিমু কেমনে বৌ-পোলাইন নিয়ে চলবোই বা কেমনে তার চিন্তায় বাঁচি না। সরকার যা আমাগো জন্য যা বরাদ্ধ দেয় তা সব উপরের ( যারা প্রকৃত জেলে না) মানুষেরা পায়। আমরা কিছুই পাইনা।নাছির মাঝির মতো করোনা দুর্যোগের মধ্যেও মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাগরে ৬৫ দিনের জন্য মাছ শিকার বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে পড়ে চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে ভোলার প্রায় ৬৩ হাজার জেলে। মাছ ধরা বন্ধ থাকায় অভাব-অনাটন আর সংকটের মধ্য পড়েছন তারা। পরিবার-পরিজন নিয়ে কিভাবে দিন কাটাবেন সে চিন্তায় দিশেহানা হয়ে পড়েছে।মার্চ-এপ্রিল ২ মাস বিভিন্ন নদীর অভয়াশ্রম গুলোতে ইলিশ সহ অন্যান্য মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার ৩ সপ্তাহ পর ফের সাগরে মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় হতাশ ভোলার সমুদ্রগামী জেলেরা। তাদের মতে মৌসূম না আসায় মে-জুনে নদীতে এমনিতেই ইলিশ থাকেনা। এসময় সমুদ্র এলাকায় কিছু ইলিশ পাওয়া যায়। কিন্তু নদীতে দু মাস মাছ শিকার করতে না পাড়ায় যে ক্ষতির কবলে পড়েছেন জেলেরা তার ধকল কাটিয়ে ওঠার আগ মূহুর্তে সাগরে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞার এমন নির্দেশকে তারা বিনা মেঘে বর্জপাতের মতো ঘটনা বলে মনে করছেন। চরফ্যাশনের পাঁচ কপাট ঘাটের সাগররে মাছ ধরতে যাওয়া মফিজল মাঝি বলেন, এমন নিষেধাজ্ঞা থাকলে নৌকা, জাল, জ্বালানি ও শ্রমজীবি জেলেদের ব্যয় নির্বাহ করে এ পেশায় টিকে থাকা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। কেউ ধার দেনা করে দিন কাটাবেন কেউবা বিকল্প পেশা খুজছেন । কষ্টে দিন কাটাতে হবে আমাদের । এ অবস্থায় সরকারের বরাদ্দ আরো বাড়ানো দাবী করেন তিনি । এ অবস্থায় জেলেরা সাগরে মাছ শিকারে ৬৫ এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার অথবা সময় কমিয়ে ১ মাসে আনার দাবি জানিয়েছেন। এবছর আশাকরছি মাছের সিজনে ব্যবসা করবো। কিন্তু ২ মাসের অভিযানে জেলেরা মাছ ধরতে পারে নায়। নদীতেও এখন মাছ নাই। সাগরে যারা মাছ ধরে তাদের দিকে আমাদের তাকিয়ে থাকতে হয়। জেলেরা মাছ ধরে আনবে। সেই মাছ বিক্রি করে আমরা দেনা পাওনা শোধ করমু। কিন্তু সাগরেও এখন অভিযান দিছে। আমাদের দেশের জেলেরা তো সব অভিযান মানে কিন্তু এই সময় বাংলাদেশের জলসীমায় নির্বিচারে মাছ ধরেন ভারতীয় জেলেরা। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন মৎস ব্যবসায়ীদের এসময় সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ দেয়ার দাবি করেন। এছাড়াও নিষেধাজ্ঞার শুরুর দিকে যথাযথ সহায়তা না পেলে বাধ্য হয়ে মাছ ধরতে হবে অনেকে জেলেকে বলে জানায় জেলেরা।

SHARE