চলে গেলেন মনপুরার জনবান্ধব ওসি শাখাওয়াত

#############
মাহিয়ান হিমেল।
ভোলা জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মনপুরা উপজেলায় সন্ত্রাস,চাঁদাবাজ,মাদক,নারী নির্যাতন প্রতিরোধসহ জনগনের জানমাল নিরাপত্তায় বলিষ্ঠ অবদান রাখা ওসি শাখাওয়াত হোসেন বিদায় নিয়েছেন সাধারণ মানুষের ভালোবাসার মধ্যদিয়ে।। জনগনের আস্থাবাজন ওসি শাখাওয়াতের বিদায়কে কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না স্থানীয় সাধারণ মানুষ।

অপরাধ নিমূলে অবদান রেখে গণমাধ্যমে বার বার উঠে আসা ওসি শাখাওয়াতকে বিদায় জানাতে মনপুরা লঞ্চ ঘাট পর্যন্ত ওসির সাথে সাথে দেখা যায় সাধারন মানুষের ভিড়ের মহড়া ।। জানাযায় ওসি শাখাওয়াতের বিদায়ের বিষয়টি জানাজানি হলে সাধারণ মনপুরা চরম হতাশা বিরাজ করছে।

ওসি শাখাওয়াত যোগদানে পর থেকে স্থানীয় চাঁদাবাজ, ভূমিদস্যু,জলদস্যু,মাদক,বাল্যবিবাহ, নারী নির্য়াতন, স্থানীয় মটোর সাইকেল যান থেকে ১ মাসিক ১ লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় বন্ধসহ নানা ধরনের সামাজিক কর্মকান্ডে বেশ অবদান রেখেছেন।। মটোর সাইকেল চালক জসিম রানা জানান,আমাদের থেকে সমিতির নামে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা দেওয়া লাগতো কিন্ত ওসি শাখাওয়াত মনপুরায় আসার পর থেকেই আমরা এ ধরনের চাঁদবাজদের হাত থেকে মুক্ত হয়েছি।।

গত ১১ এপ্রিল ২০২০ তারিখের জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের থেকে ভোলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়ছারে স্বাক্ষরকৃত এক অফিস আদেশে ওসি মনপুরাকে বদলী দেখানো হয়েছে।।

এ বিষয়ে ওসি মনপুরা সাংবাদিকদের বলেন আমি আমার কর্তৃপক্ষের আদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তবে মনপুরা মানুষ ভালোবাসা কখনো আমি ভূলবো না।।

বদলীর আদেশর বেশ কয়েকদিন পরে গত ২০শে এপ্রিল ছাত্রলীগ নেতা ও শিক্ষক শামসুলদ্দিন সাগরের সাথে বিচ্ছিন্ন ঘঠনার বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন,আমি কোন দরবার ও অপরাধীকে বাচানোর চেষ্টা তবদির পছন্দ করি না। শামসুদ্দিন মনপুরার থেকে আরেকটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চর নিজাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। অথচ নিজেকে এখনো ছাত্রলীগ নেতা দাবী করে পুলিশ প্রশাসনকে জ্বিম্মি করে অপরাধীদের পক্ষ নিয়ে দেনদরবার করতে প্রায় থানায় আসে সরকারি কাজে বিঘ্ন তৈরি করেন।।

ওসি আরো বলেন,মূলত আমার বদলীর কথা শুনের সন্ত্রাসীদের পক্ষ নিয়ে আমাকে বির্তকৃত করার উদ্দেশ্য গত মোঙ্গলবার মনপুরা থানায় এসে শিক্ষক শামসুদ্দিন উচ্চ আওয়াজে বলেন আমি নেতা শামসু! ওসির বাদলী আমি করিয়েছি! ওসিকে কখন বিদায় হবে।। এ নিয়ে আমার (ওসি মনপুরার) সাথে কিছুটা বাকবিতন্ডায় হয়।।

এদিকে ২ নং হাজির হাট ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী শাহারিয়া চৌধুরী দ্বীপকের নির্বাচনী প্রচারনায় করোনা কালীন সময়ে গনজমায় করায় ওসি মনপুরা গনজামায়তকে পন্ড করে দেন, বিষয়টি নিয়ে ওসি শাখাওয়াত সাথে মত বিরোধ তৈরি হয় দ্বীপক বাহিনীর সদস্যদের সাথে,মূলত শিক্ষক শামসুদ্দিন দ্বীপক বাহিনীর একজন সদস্য।।

স্থানী অপরাধ ও গণমাধ্যম সূত্রে জানাযায় ইতোপূর্বেও শিক্ষক শামসুদ্দিন ছাত্রলীগ নেতা দাবী মনপুরায়, টি এন টির সরকারি জায়গায় দখল,সরকারি আনসার ভিডিপির জায়গা দখল,থানায় ধর্ষন চেষ্টার জিডির,জেলেদের জ্বীম্ম করে চাঁদবাজী করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে ।।

এ বিষয়ে মনপুরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাথে ফোন আলাপ তিনি জানান,মনপুরার ওসি শাখাওয়াত হোসেন একজন কর্তব্যপরায়ন মানুষ এবং সাধারণ মানুষ পুলিশ তাহার অনেক জনপ্রিয়তা রয়েছে। আমি রাত দিন য ডেকেছি তখনি তিনি আমাকে রাষ্ট্র কাজে সহোযোগিতায় করেছেন।।

বিষয়টি মনপুরা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে আলাপ কালে তিনি বলেন ওসি শাখাওয়াত একজন দ্বায়িত্বশীল ব্যাক্তি ছিলেন এবং সাধারণ মানুষ কাছেও তিনি খুব প্রিয় ব্যক্তি ছিলেন।।

পুলিশ সুপার ভোলার সাথে বদলী নিয়ে আলাপকালে তিনি বলেন ওসি শাখাওয়াতকে জেষ্ঠত অনুযায়ী কর্মরত রাখা হবে,তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই এ ছাড়া ইতোপূর্বে সুনামের সহিত তার উপর অর্পিত দ্বায়িত্ব তিনি নিয়োজিত ছিলেন।।

শিক্ষক শামসুদ্দিন বিষয়ে মনপুরা সহঃ প্রাথমিক কর্মকর্তা মিজানুর সাথে আলাপকালী তিনি বলেন আমার কাছে কোন লিখিত অভিযোগ নেই, তবে সরকারি চাকুরীতে থেকে কোন রাজনৈতিক সভা সমাবেশ অংশগ্রহন সরকারি চাকুরীবিধি পরিপন্থী।

শিক্ষক শামসুদ্দিনকে নিয়ে তাহার কর্মস্থল মনপুরা উপজেলা থেকে ৬৫ কিঃমিঃ দূরে বিচ্ছিন্নদ্বীপ চর নিজাম সরকারি প্রাঃ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল জানান, শিক্ষক শামসুদ্দিন আমার ফোন ধরে না,তিনি অনুমতিবিহীন কর্মস্থলের বাহিরে এবং তিনি আমার সাথে ক্ষমতা দেখান।।

উল্লেখ ওসি শাখাওয়াত হোসেনকে মনপুরা থানা থেকে গত ১১ এপ্রিল ভোলা পুলিশ লাইনে বদলী করা হয়।। বর্তমানে তিনি ভোলা পুলিশ লাইনে কর্মরত রয়েছেন।।

SHARE