ভোলায় পরকীয়ায় বাঁধা দেয়ায় স্ত্রীকে মারধর!!

 

 

ভোলা প্রতিনিধি।।

ভোলা সদর উপজেলায় পরকীয়ায় বাঁধা দেয়ায় স্ত্রীকে মারধর করে গুরুতর আহত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। স্বামীর নাম মো. আব্দুস সাত্তার। শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সাহেবের চর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত স্ত্রী বিবি লাইজু ভোলা সদর হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
আহত চার সন্তানের মা বিবি লাইজু বলেন, গত প্রায় ১৫ বছর আগে সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়নের সাহেবের চর গ্রামের আনিচ মালের ছেলে আব্দুস সাত্তারের সাথে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়। বিয়ের চার বছর তাদের সংসার ভালোভাবেই চলছিলো। ইতোমধ্যে তাদের সংসারে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তান জন্মগ্রহণ করে। এ অবস্থায় দেশে কোনো কাজ না পেয়ে তার স্বামী আব্দুস সাত্তার চট্টগ্রাম পোর্টে চাকুরী করতে যায়। এর পর থেকেই তাদের সংসারে অশান্তি শুরু হয়। পরে খোজ নিয়ে বিবি লাইজু জানতে পারে স্বামী আব্দুস সাত্তার চট্টগ্রামে এক মহিলার সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পরে। যার ফলে আব্দুস সাত্তার সংসারে বাজার থেকে শুরু করে ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ দেয়া বন্ধ করে দেয়। এতে স্ত্রী লাইজু সংসার খরচের টাকা পয়সা চাইলে তাকে মারধর করে সাত্তার। এমনকি স্বামী আব্দুস সাত্তার তার চিকিৎসার খরচও দিতেন না। টাকা চাইলে উল্টো লাইজুর বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দেয়ার কথা বলে সে। টাকা এনে দিতে না পারলে স্বামী আব্দুস সাত্তার, শ্বাশুড়ি কোহিনুর বেগম, দেবর দুলাল ও নোয়াব মিলে তাকে মারধর করে। এ নিয়ে ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ কয়েক বার মিমাংশা করেও কোনো লাভ হয়নি।
সর্বশেষ গত ১০-১২ দিন আগে আব্দুস সাত্তার চট্টগ্রাম থেকে বাড়িতে আসে। কিন্তু ঘরে চারটি সন্তান থাকা সত্বেও সে কোনো কিছুই আনেনি। এমনকি সংসারের বাজার সদাই কেনো কিছুই কিনে দেয়নি। এগুলো চাওয়ার কারনে শনিবার রাতে আব্দুস সাত্তারের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সে ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রী লাইজুকে লাঠি দিয়ে বেধম মারধর করে। এক পর্যায়ে সে মাটিতে পরে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এর মধ্যে তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন তার কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে যায়। পরে জ্ঞান ফিরলে লাইজু পালিয়ে ঘর থেকে পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেখান থেকে তার মাকে খবর দিলে তারা লাইজুকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
লাইজুর মা বিবি রাহিমা অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের পর মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে জামাই আব্দুস সাত্তারকে চার গন্ডা জমি কিনে দিয়েছি। এবং নগদ ৭০ হাজার টাকা, গরু, ছাগলসহ স্বর্ণালংকার দিয়েছি। কিন্তু তার পরও মেয়ের সুখ হয়নি। জামাই আব্দুস সাত্তার টাকা ইনকাম করে অন্য মহিলার সাতে পরকিয়া করে। আমার মেয়ে ও নাতি নাতনীদের খোজ রাখেনা। মাঝে মধ্যে বাড়িতে আসলে আমার মেয়েকে মারধর করে। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুস সাত্তার মারধরের কথা স্বীকার করে বলেন, আমাদের দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি নিয়ে স্ত্রী লাইজু উল্টাপাল্টা কথা বলায় তাকে হালকা চর-থাপ্পর দিয়েছি।
ভোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ইকরামুল আলম
ভোলা
২৫/১০/২০২০

SHARE