করোনাকালে স্মার্টফোন আসক্তি শিক্ষার্থীদের সাস্হ্য ঝুঁকি বাড়াচ্ছে

————————————মোঃআশরাফুল আলম
ভয়াল ভাইরাস করনার কারণে পাঁচ মাসেরও অধিক সময় ধরে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ । এমন পরিস্থিতিতে অনলাইন ক্লাসই শিক্ষার্থীদের ভরসা । মোবাইল স্ক্রিনে চোখ রেখেই শিক্ষকের থেকে পাঠ নিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।কিন্তু এতে লেখাপড়ার অভ্যাস বজায় থাকলেও অন্য একটি মারাত্মক খারাপ অভ্যাসও তৈরি হচ্ছে। যা হল মোবাইলের প্রতি তীব্র আসক্তি। আর তাতেই স্বভাবগতভাবে নানা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিশোর-কিশোরীদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি লক্ষণীয়। গবেষণায় এমনি তথ্য উঠে এসেছে।কিং জর্জস মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির একজন সিনিয়র মনোবিদ বলেছেন, ‘মোবাইলে অনলাইন ক্লাস করার সুযোগে অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহারের সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে অল্প-বয়স্ক অনেক শিক্ষার্থীরা। তারা এই ডিভাইস ব্যবহারে আসক্ত হয়ে পড়ছে। যার ফলে অল্পতেই মেজাজ হারানো কিংবা খিদে না পাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিচ্ছে।’
এছাড়া মাথাব্যথা, চোখ জ্বালা করার মতো সমস্যাও আছে।মনোবিদের মতে, বিজ্ঞানের অগ্রগতির যুগে বেশিরভাগ অল্প-বয়স্ক ছেলে মেয়ে এখন জন্ম থেকে হাতে মোবাইল ফোন পেয়ে যাচ্ছে। ফলে ছোট থেকে গেম খেলা কিংবা ভিডিও দেখার শখ তৈরি হচ্ছে। কিন্তু মহামারির মধ্যে এর মাত্রা অনেকটাই বেড়েছে বলে মনে করছেন তারা।সমস্যা আরও একটা আছে। কোন কিশোর-কিশোরী সত্যিই এ ধরনের সমস্যায় পড়লে করোনা সংক্রমণের ভয়ে তাকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছেও যাওয়া যাচ্ছে না। ফলে পরিস্থিতি সামলাতে হচ্ছে অভিভাবককেই। আর মা-বাবার কথায় অনেক সময়ই গুরুত্ব দিচ্ছে না সন্তান। তাই সমস্যাও মিটছে না।ভারতের প্রয়াগরাজ মোতিলাল নেহরু হাসপাতালের মনোবিদ বলছেন, ‘আগের তুলনায় অনেক বেশি অভিভাবক এই ধরনের সমস্যা নিয়ে তার কাছে আসছেন। তার ব্যাখ্যা, লকডাউনের মধ্যে বাড়ির সকলেই ভার্চুয়াল দুনিয়ায় ব্যস্ত। অভিভাবকদের অনেকে আবার ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ করছেন। ফলে বাচ্চাদের ঠিকমতো সময় দেওয়া হচ্ছে না। তার সঙ্গে বেশি করে কথা বলা হচ্ছে না। ফলে কিশোর-কিশোরীরা মোবাইলের দিকে ঝুঁকছে। তাদের স্মার্টফোন দেখতে বারণ করা হলে তারা বিরক্ত হচ্ছে। খিটমিটে স্বভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাদের ভেতর।
একই সাথে দিনের অনেকটা সময় স্মার্টফোনের স্ক্রিনে চোখ থাকায় চোখ লাল হওয়া বা চোখ থেকে জল পড়ার ঘটনাও ঘটছে। দৃষ্টিশক্তিও দুর্বল হচ্ছে।
তাই চিকিৎসকদের পরামর্শ, নিজের সন্তানদেরকে পর্যাপ্ত সময় দিন। তাদের অন্য খেলায় ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করুন। অনলাইন ক্লাসের পাশাপাশি অফলাইনে তাদের লেখাপড়ায় আপনিও সাহায্য করুন।

SHARE