ভোলায় করোনায় কমতে পারে পশু কোরবানি, শঙ্কায় খামারিরা

 

 

মোঃ আরিয়ান আরিফ।।

দিন যতই সামনে এগোচ্ছে ততই পবিত্র ঈদুল আজহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদের সময় ঘনিয়ে আসছে। আর তাই কোরবানির পশুকে ঘিরে ভোলার খামারি থেকে শুরু করে গ্রামের হাট-বাজারে ব্যস্ততা শুরু হয়েছে।

তবে এবারের প্রেক্ষাপট নিয়ে শঙ্কিত খামারিরা। সেইসঙ্গে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন এবারের পশু কোরবানি নিয়ে। তাদের মতে, করোনার বর্তমান পরিস্থিতিতে আর্থিক দৈন্যতায় পশু কোরবানি অনেকটাই কমে যেতে পারে। ইচ্ছা থাকলেও অনেকেই আর্থিক সমস্যায় কোরবানি নাও দিতে পারেন। তাই করোনায় কমতে পারে পশু কোরবানি।

মেঘনা ডেইরী পার্ম এর সভাপতি আখতার হোসেন বলেন, কোরবানির জন্য আমাদের খামারিদেরই প্রয়োজনের তুলনায় নেক বেশি গুরু রয়েছে। এই অবস্থায় বাহিরের গরু আসলে খামিরিরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। করোনার কারণে গত চারমাস ধরে গোখাদ্যের দাম অনেকটাই চড়া রয়েছে। সেই হিসেবে পশু পালনে গত চারমাসে খরচও বেড়েছে। সবমিলিয়ে পশুর দামও কোরবানিতে কিছুটা বাড়াতে হবে। আর ভালো দাম না পেলে লোকসান গুনতে হবে।

যদিও লোকসান দিয়ে পশু বিক্রি করবেন না বলে জানিয়েছেন ভোলার বিভিন্ন এলাকার খামারিরা।

খামার মালিক জসিম তালুকদার ও মনির হোসেন বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাবে অনেক খামারের আকার ছোট করা হয়েছে। তাছাড়া পশুখাদ্যের দাম বিগত বছর থেকে এবার বেড়েছে। এতে করে খামারের খরচ বেড়েছে। আমরা লাভের আশায় দিন-রাত কাজ করলেও গত ২/৩ বছর তুলনায় এবার ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হবার আশঙ্কা করছি। তবে এবার প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে গরু না এলে আমাদের কিছুটা ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে আশা করছি।

দক্ষিণ চরপাতা গ্রামের খামারী মো. জসিম বলেন, আমার খামারে ৬০ টি গরু রয়েছে। জমিদার নামে একটি গরুর দাম হাকাচ্ছেন ৫ লাখ টাকা।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ছোলা, বুট, ডালসহ ভাল ভাল খাবার খাইয়ে পালন করেছি এখন সঠিক দাম পাব কি না তা নিয়ে চিন্তিত। ক্রেতারা জমিদারের যে দাম হাকাচ্ছে তাতে আমার লাকসান হবে।
জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ইন্দ্রজিত কুমার মন্ডল বলেন, জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে খামারীদের ব্যয় কমানোর জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এবার কোরবানির চাহিদা একটু কম। অনলাইনে পশু কেনা বেচার জন্য খামারিদের নিয়ে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। যার মাধ্যমে অনলাইলে গবাধি পশু কেনা বেচা হবে। তবে অনলাইনে পশু কেনাকাটা করতে তেমন একটা আগ্রহ প্রকাশ করছেন না কেউই।

ভোলা জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্র জানান, ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার খামারী দিন রাত প্রাকৃতিক উপায়ে পশু মোটাতাজা করনে কাজ করছে। প্রতিটি খামারে ছোট, মাঝারি ও বড় সবধরণের কোরবানির পশু রয়েছে। খামারে থাকা পশু দিয়েই মিটবে জেলার ৮০ ভাগ চাহিদা এমনটা মনে করছেন অনেকে। তবে চলতি পরিস্থিতিতে কোরবানির পশু ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি নিয়ে খামারিদের মধ্যে সংশয় রয়েছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্র আরও জানান খামারিদের লাভের কথা মাথায় রেখে অনলাইনে কেনাবেচার পাশাপাশি কম খরচে পশু মোটা তাজা করণের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তবে অনলাইনে পশু কেনাকাটা করতে তেমন একটা আগ্রহ প্রকাশ করছেন না কেউই।

SHARE