আসামী ধরে দিলো এলাকাবাসী, নিয়ে গেলো পুলিশ!

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন রাজশাহীর নারী নির্যাতন ও হত্যা চেষ্টা মামলার প্রধান আসামী। নির্যাতিতের অভিযোগ, তাকে গ্রেফতার করছিলোনা নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ। পুলিশের দাবি, আসামী নিরুদ্দেশ তাই ধোরা ছোঁয়ার বাইরে। অবশেষে গত ১১ মে আসামীকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন এলাকার লোকজন। পরদিন পুলিশ ওই আসামীকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়। গ্রেফতারকৃত ওই আসামী হলেন-নগরীর কাদিরগঞ্জ দড়িখরবোনা এলাকার বাসিন্দা অলিউল হোসেন বিপ্লব (৪৬)। নগরীর সাহেববাজার এলাকায় হিরা জুয়েলার্স নামের তার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নির্যাতনের শিকার মায়া বেগম (৪৫) নগরীর শিরোইল শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা। গত ১২ এপ্রিল নগরীর সাধুরমোড় এলাকার নিজস্ব ছাত্রাবাসে তার উপর দফায় দফায় নির্যাতন চালান বিপ্লব ও তার ভাড়াটে গুন্ডারা। ৯দিন ঘুরে ২০ এপ্রিলে মামলা নেয় বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ। মামলায় বিপ্লবকে এজাহারনামীয় একমাত্র আসামী করা হয়। অজ্ঞাত আসামী করা হয় আরো ৫-৬ জনকে। কিন্তু ধোরা পড়ে না কোনো আসামী। মায়া বেগমের অভিযোগ, মামলা নিলেও অদৃশ্য কারণে আসামী গ্রেফতার করছিলোনা পুলিশ। আর এই সুযোগে আসামী মামলা তুলে নেয়ার চাপ দিচ্ছিলেন। মিথ্যা মামলায় নির্যাতিতা ও তার পরিবারের সদস্যদের ফাঁসানোর হুমকিও দিচ্ছিলেন সন্ত্রাসীরা। ওই নারীর বলেন, বিপ্লবের দোকানেদীর্ঘদিন ধরে ক্রেতা ছিলেন তিনি। এই সুবাদে ব্যাংক চেক জমা রেখে ব্যবসার জন্য বিপ্লব তার কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা ধার নেন। চুক্তি ছিলো দুই মাসের মধ্যেই টাকা পরিশোধ করবেন বিপ্লব। কিন্তু তিনি কথা রাখেননি। বার বার ধর্ণা দিয়েও টাকা আদায় করতে পারছিলেননা মায়া। গত ১২ এপ্রিল ২ লাখ টাকা দেয়ার নাম করে তাকে সাধুরমোড় এলাকার নিজস্ব ছাত্রাবাসে ডেকে নেন বিপ্লব। ওই সময় সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করছিলেন তার ভাড়াটে গুন্ডাবাহিনী। সেখানে চেক ফিরিয়ে দেয়ার জন্য চাপ দেন বিপ্লব। রাজি না হওয়ায় শুরু করেন এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করেন। হত্যার উদ্দেশ্যে দফায় দফায় চলে নির্যাতন। সন্ত্রাসীরা ওই নারীর শ্লীলতাহানির চেষ্টাও চালায়। ছিনিয়ে নেয় গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন। মুখ না খোলার শর্তে শেষে ওই নারীকে ছেড়ে দেন সন্ত্রাসীরা। ভুক্তভোগী মায় বেগম জানান, আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালোও ধরছিলোনা পুলিশ। গত ১১ মে শিরোইল শান্তিবাগ এলাকার একটি বাড়িতে তাকে দেখতে পান তিনি। এসময় এলাকাবাসীর সহায়তায় আসামীকে আটকান। থানায় খবর দেয়া হলে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসে তাকে হেফাজতে নেন। আসামী গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বোয়ালিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক মতিন আহম্মেদ। তিনি বলেন, এলাকাবাসীর সহায়তায় আসামী অলিউল হোসেন বিপ্লবকে গ্রেফতার করা হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলা তদন্তাধীন। অন্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান এসআই মতিন। এবিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘বিষয়টি নগদ অর্থ ও চেক সম্পর্কিত। তাই করোনাকালীন সময়ে কোর্ট না খোলা পর্যন্ত এবং এক্সপার্ট ব্যক্তি দ্বারা চেকটির সত্যতা যাচাই না হওয়া পর্যন্ত কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়। তবে শারিরীক নির্যাতন ও শীলতাহানীর বিষয়ে তিনি জানান, নির্যতনের স্বীকার মায়া বেগমের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আসামীকে ১১ এপ্রিল পুলিশ তাদের আটক করতে সক্ষম হয় এবং পরদিন তার বিরুদ্ধে মামলার প্রেক্ষিতে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।

SHARE