প্রতিষ্ঠান বন্ধে নেতিবাচক প্রভাব শিশু শিক্ষার্থীদের উপর, মতামত বিশেষজ্ঞদের

 

মোঃ আশরাফুল আলমঃ
মহামারি করোনা ঠেকাতে সরকারের সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ ছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা। তখন থেকেই প্রায় দুই মাস যাবত স্কুল বন্ধ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যেই বলেছেন, সংক্রমণ পরিস্থিতি উন্নতি না হলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হবে।
দীর্ঘ সময় এই অস্বাভাবিক বিরতিতে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি তারা মানসিকভাবে ভালো নেই।
অভিভাবক এবং বিশ্লেষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে প্রাথমিক পর্যায়ের শিশু শিক্ষার্থীদের উপর।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এ সময়টিতে পড়াশুনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা সামাজিকতাও শিখে। এক্ষেত্রে স্কুলের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বিশ্লেষক এবং অভিভাবকরা।
ভোলা আবহাওয়া অফিস রোডের বাসিন্দা জিয়াউল হাসানের এক ছেলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেনির শিক্ষার্থী।
তিনি বলেন, তার সন্তান এখন লেখাপড়ায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।স্কুল বন্ধ থাকলে বাচ্চারা বাসায় পড়তে চায়না।
তিনি বলেন, তার সন্তান নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে যাওয়া, সেখান থেকে ফিরে আসা এবং বাসায় পড়তে বসার বিষয়গুলো নিয়মিত রুটিনের মতো ছিল।
এখন রুটিন বলতে আর কিছু নাই। স্কুল ছিল ওর আনন্দের জায়গা। সেখানে সে খেলাধুলা করতো। সবচেয়ে বেশি শিখতো সামাজিকতা,” বলছিলেন জিয়াউল হাসান।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারনে স্কুল বন্ধ থাকায় বাসায় বন্দি শহরের শিক্ষার্থীরা।
ভোলা সদর উপজেলায় ওয়েস্টার্ন পাড়া সঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মোর্শেদা খানম বললেন, দীর্ঘ সময় স্কুল বন্ধ থাকায় শিশুদের মানসিক বিকাশের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
স্কুলের আঙিনা সামাজিকতা শেখার অন্যতম জায়গা।
স্কুলে খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক নানা আয়োজন থাকে। স্কুল বন্ধ থাকায় শিশুরা সেসব বিষয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে গবেষণা করেণ এমন একটি প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুঁথিগত বিদ্যার বাইরে শিক্ষার্থীদের বড় প্রত্যাশার জায়গা থাকে খেলাধুলা এবং বন্ধু মহল।
তিনি বলেন অনেক শিশু প্রথমে স্কুলে যেতে চায়না কিন্তু পরবর্তীতে সেখানে যখন তাদের বন্ধু তৈরি হয় তখন সে জায়গাটি তাদের জন্য আনন্দময় হয়ে উঠে।
তিনি আরো বলেন, যে বয়সটিতে শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে, সে সময় তাদের সামাজিকতা শেখার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। স্কুলে বিভিন্ন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সাথে মেলামেশা, নানা ধরণের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তাদের সমাজের সাথে পরিচিত হতে সাহায্য করে।
“স্কুলের মাঠ তাদের অতি প্রিয়। বিশেষ করে শিশু শিক্ষার্থীদের।করোনার এ পরিস্হিতিতে খোলা বাতাসে ঘরের বাইরের আনন্দটা তারা মিস করে বলে মনে করেণ এ বিশেষজ্ঞ।

SHARE