কলেরার আপডেট করোনা

নিউজ ডেস্কঃ

কলেরার আপডেট করোনা। যমে মানুষে যুদ্ধ। প্রাণীকূলের অসহায় আত্মসমর্পন। দেশে দেশে লাশের পাহাড়। চারিদিকে হাহাকার। বাঁচার লড়াই। ওষূধ,পথ্যহীন দুনিয়া। এ এক জীবনকে থমকে দেয়ার ইতিহাস।

যুগে যুগে একের পর এক রোগ বালাই ঠেসে ধরেছে মানুষকে। তছনছ করে তারা ফিরেও গেছে। বিজ্ঞানীদের ঘুম হারাম করেছে। দিনের পর দিন চেস্টা চালিয়ে আবিষ্কার করেছে ভ্যাকসিন। রোগ বালাই ও শান্ত হয়েছে। বর্তমান সময়ে গোটা বিশ্ব করোনা ভাইরাসের কালো থাবার কবলে। উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা উত্তর, দক্ষিন, পূর্ব, পশ্চিম সবজায়গায়। ভেদাভেদ নেই সাদাকালোতে। মহাশক্তিশালী এই করোনার সঙ্গে লড়তে হচ্ছে নিরস্ত্র মানুষদের। কোন অস্ত্রে থামানো যাবে করোনাকে? তামাম দুনিয়ার বিজ্ঞানীরা নাস্তানাবুদ। অস্ত্র খুজতে ব্যাকুল বিশ্ব। বহু পন্ডিত, ঋষির ঘুম হারাম কিন্তু না। কোনো উপায় বের করা সম্ভব হচ্ছে না, ফলে তিনমাস ধরে পৃথিবী টালমাটাল। দেশে দেশে মানুষের মড়ক।

আইসোলেশন, কোয়ারেন্টিন। স্বেচ্ছায় ঘরবন্দি। বারবার হাত ধোয়া। নিজেকে সঙ্গরোধ করেও রক্ষা করতে পারছে না কেউ কেউ। কেয়ামতের আগেই যেন এ এক কেয়ামত। মানুষ দৌড়াচ্ছে। পিছু নিচ্ছে করোনা। বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোও বিপর্‍্যস্ত। চীন থেকে শুরু হয়ে আমেরিকা, ইতালী, কানাডা, ফ্রান্স, স্পেন, রাশিয়া, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, বাংলাদেশ সব এক কাতারে। কেউ কারো উপকারে আসছে না। সবাই ব্যাস্ত নিজেকে নিয়ে। কারো দিকে তাকানোর সুযোগ নেই। সৃষ্টিকর্তার দরবারে শূন্য হাত পেতে ভিক্ষা চাইছেন জনতা। করোনার গজব, আজাব থেকে পরিত্রাণের সাহয্য চাইছেন।

আসলে জন্মের সঙ্গেই জড়িত রোগবালাই। পৃথিবী সৃষ্টির পর দুনিয়াতে এমন অনেক রোগবালাই এসেছে। মানুষ পরাজিত হতে হতে একসময় থমকে দাড়িয়েছে। আবিষ্কার করেছে ভ্যাকসিন। এ ভ্যাকসিন দিয়ে পরাজিত করেছে মহামারীকে। ইতিহাস সবার জানা। মাত্র পঞ্চাশ বছর আগে ফিরে গেলেই দেখা যায় একেকসময় একেক বালাই এসেছে যমদূতরুপে। কলেরার কথা কার না মনে আছে? সে সময় গ্রাম কি গ্রাম কলেরায় সাফ করে গেছে। একদিক দিয়ে গ্রামে প্রবেশ করেছে অন্যদিক দিয়ে বের হয়েছে। নিয়ে গেছে বহু আপনজনের লাশ। অসহায় মানুষের কিছুই করার ছিল না। সে সময় ওষুধ বলতে ছিল ঝাড়ফুক। কিংবা গ্রামের কোনো হুজুরের “বাসন পড়া” ।

আবার দেখা গেছে রাতের পর রাত গ্রামের এ মাথা থেকে ও মাথা দৌড়াতে দৌড়াতে হুজুররা পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত করেছেন। একসময় কলেরা থেমেছে। আবিষ্কার হয়েছে ওষুধ, ভ্যাকসিন। এরপর কিছুদিন শান্ত থাকার পর এসেছে গুটি বসন্ত। এ ও এক আতংকের নাম। মৃত্যু অবধারিত। বিশেষজ্ঞরাও বসে নেই। কাজে লেগে পড়েন ওষুধ আবিষ্কারের। এখানেই ক্ষান্ত নেই। যক্ষা। কারো হলে যক্ষা, তার নেই রক্ষা। এ স্লোগান ছিল মানুষের মুখে মুখে। কত প্রাণ যে বিলীন হয়েছে যক্ষায় তার ইয়ত্তা নেই। আজ যক্ষাও মানুষের অধীনে। নিয়মিত অসুধ খেলে যক্ষা ভাল হয়। এটি এখন আর মরনব্যাধী নয়। এমনই একসময় টাইফয়েড, নিওমনিয়ায় ও মানুষ মৃত্যুকে আলিজ্ঞন করত। কেউ বেচে গেলেও কোন না কোণ অঙ্গহানি হত তার। এমন অনেক রোগ কাবু করে গেছে মানুষকে যুগে যুগে। কিন্তু বর্তমান আধুনিক সভ্যতার যুগে, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যুগে গোটা বিশ্বকে কাপিয়ে দিয়েছে এক করোনা। দেশে দেশে চলছে লকডাউন। বিশ্ব মোড়লরা অসহায় চোখে তাকিয়ে আছে। লাশের পাহাড় সবার চোখের সামনে। কারো কিছু করার নেই। প্রতিটি দেশ নিজেকে বাচানোর লড়াইয়ে ব্যাস্ত। সরকার প্রধানরা তার দেশের মানুষকে বাঁচাতে হাজারো চেস্টা করছেন। সতর্কতা ও সচেতনতা ছাড়া এমূহূর্তে কোনো ওষুধ নেই।

সৃষ্টিকর্তার দরবারে সবাই প্রার্থনারত। নেট দুনিয়ায় ঝড় তুলেছে ইতালীর প্রধানমন্ত্রীর কান্না। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী নিজেই আক্রান্ত। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট যেন এ মূহূর্তে এক নিঃসঙ্গ মানুষ। করোনা থেকে রেহাই পেতে সবাই সৃষ্টিকর্তার করুনাপ্রার্থী। মহান সৃষ্টিকর্তাই পারেন এ দূর্জোগ থেকে তার বান্দাদের রক্ষা করতে। কলেরা, গুটিবসন্ত, যক্ষা, টাইফয়েড, নিউমনিয়াকে সৃষ্টিকর্তা যেভাবে পানি করে দিয়েছেন ঠিক সেভাবেই করোনাকে ধূলোয় মিশিয়ে দিতে পারেন তিনি। ইয়া রব, তুমি মানব জাতিকে এ মহা দূর্যোগ থেকে রক্ষা কর।

এ লেখাটি লিখছেন বাংলাদেশের সুনামধন্য সাংবাদিক শামিমুল হক

SHARE