অতিরিক্ত বইয়ের চাপে শিশুর মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্হ

মোঃ আশরাফুল আলমঃ-
শিক্ষার নামে শিশুর ওপর মাত্রাতিরিক্ত বইয়ের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। সরকারী নির্দেশনায় নির্ধারিত বইয়ের বাইরে শ্রেণীকক্ষে শিশুদের বাড়তি কোনো বই পড়ানোর নিয়ম না থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।

কিন্ডারগার্টেনে সরকারের দেয়া বিনামূল্যের বইয়ের বাইরে পড়ানো হচ্ছে অতিরিক্ত তিন থেকে সাত আটটি বই। এছাড়া জেলার প্রাইভেট স্কুলগুলোতেও শিশুদের মাত্রাতিরিক্ত বই পড়ানো হচ্ছে। ফলে মানসিক চাপে শিশুর মেধা বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি স্বীকার করলেও কার্যত কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। শুধু তাই নয়, অনুমোদনহীন বই বিক্রি হলেও এ বিষয়ে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

কিন্ডারগার্টেন স্কুলের কেজি শ্রেণীতে সরকারিভাবে বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে বাংলা,ইংরেজি ও গণিত শেখার তিনখানা বই।বইগুলোতে বাংলা বর্ণ শেখা, গণনা করা, সংখ্যা লেখা ও ছবি আঁকা শেখার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু এই স্কুলগুলোতে আরও পড়তে হচ্ছে ‘অজানাকে জানতে হবে, বেবি পিকচার ওয়ার্ল্ড বুক, চিল্ড্রেন রাইমস, মডার্ন একটিভ ইংলিশ, রঙে রঙে ছবি আঁকা, ছোটদের অংক শেখা, মিনার ছড়া ও কচিদের বাংলা পড়া’ নামে আরও সাত আটটি বই। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ খানা বইয়ের অনেকগুলো পৃষ্ঠা। সিলেবাস অনুযায়ী একজন শিক্ষার্থী ১১ মাস পড়ার সুযোগ পায়।

সেই হিসেবে তাকে প্রতিদিন দুই থেকে তিন পাতা পড়া মুখস্থ করতে হচ্ছে।শিশু শিক্ষার্থীর ওপর এমন বইয়ের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে কথা বললে বাংলাবাজার ফাতেমা খানম কলেজের ভাইচ প্রিন্সিপাল মোঃ বিল্লাল হোসেন জানান, অতিরিক্ত বইয়ের কারণে শিশুদের ওপর শুধু মানসিক চাপ পড়ছে না, তাদের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে। শিক্ষার নামে এই অত্যাচার শিশুদের মানবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে তাদের শৈশব চুরি করা হচ্ছে। শিক্ষার প্রতি ভীতি তৈরি হচ্ছে।

এই মানসিক অত্যাচারের শিকার শিশুরা যখন বড় হবে তখন জাতিগতভাবে আমাদের মানবিক সঙ্কট দেখা দেয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ভোলা সোনালী ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা খায়রুল হাসান জানান, কিন্ডার গার্টেনের এত পড়ার চাপের কারণে শিশুদের নিজস্বতা তৈরি হচ্ছে না।
সরকার নির্ধারিত বইয়ের বাইরে অতিরিক্ত বই পড়ানোর কথা জানতে চাইলে সহকারি থানা শিক্ষা অফিসার (এ টি ও) আবু তাহের মনে করেন অতিরিক্ত বই পড়ানোর কারণে শিশুদের ওপর মানসিক চাপ বাড়ছে।

তিনি আরো জানান, কিন্ডার গার্টেন ও প্রাইভেট স্কুলগুলোতে প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত শিক্ষক নেই।ফলে পাঠদান যথাযথ হচ্ছে না। এ সকল প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকারি বিধি অনুসরণের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক তদারকি জোরদার করা উচিৎ বলে তিনি মনে করেণ।

SHARE