ভোলার এসপি মোক্তার হোসেনের ভুলের ক্ষমা চাইলেন কায়সার

শেখ রনিঃ

ঢাকার একটি অস্ত্র মামলার আসামি জীবিত না মৃত, এ বিষয়ে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে সরাসরি বিচারকের কাছে প্রতিবেদন পাঠান ভোলার সাবেক এসপি মোক্তার হোসেন পিপিএম। এ ঘটনায় আজ হাই কোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন ভোলার বর্তমান পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার।

আজ ২০ আগস্ট মঙ্গলবার বিচারপতা জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে হাজির হয়ে লিখিতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন ভোলায় সদ্য যোগদান করা এ পুলিশ সুপার।

লিখিত ক্ষমা প্রার্থনা করে হাইকোর্টকে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে আর এ ধরনের ভুল হবে না।’ পরে আদালত ক্ষমার আবেদন মঞ্জুর করে ভোলার এসপিকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।

হাইকোর্টে এসপির পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবঅ এ এম আমিন উদ্দিন।

এর আগে গত ১৭ জুলাই ভোলার পুলিশ সুপারকে (এসপি) তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। এ মামলার আরেক আসামি অশীতিপর রাবেয়া খাতুন গত ১৮ বছর ধরে ঘুরছেন আদালতে।

তেজগাঁও থানার একটি অস্ত্র মামলার আসামি জুলহাস জীবিত না মৃত, সে বিষয়ে ডিএমপি কমিশনারকে গত ৩ জুলাই প্রতিবেদন আকারে জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় গত বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলহাস ওরফে জুয়েল গত ১০-১২ বছর আগে পরিবার নিয়ে ভোলায় চলে গেছেন।

অন্যদিকে, ভোলার পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে হাইকোর্ট বিভাগের দু’জন বিচারপতির বরাবরে সরাসরি খামে পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়, ভোলায় জুলহাস নামে কোনো ব্যক্তি নেই, তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ভোলা সদর এলাকায় পশ্চিম বাপতা নামে কোনো গ্রামও নেই।

এ সময় রাবেয়া খাতুনের আইনজীবী আশরাফুল আলম নোবেল আদালতকে জানান, ২০০৪ সালের ১ নভেম্বর ফার্মগেটের পশ্চিম তেজতুরিবাজার এলাকায় জুলহাসকে দুষ্কৃতিকারীরা গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় তার মা নূরজাহান বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলটি ঢাকার আদালতে বিচারাধীন।

এ পর্যায়ে আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, তাহলে পুলিশ কী প্রতিবেদন পাঠালো? এসব প্রতিবেদন পরস্পরবিরোধী। এখানে পুলিশের গাফিলতি রয়েছে।

আদালত আরও বলেন, ভোলার পুলিশ সুপার (এসপি) যেভাবে প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন, সেখানে কোনো অফিসিয়াল ডেকোরাম অনুসরণ করা হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ে না পাঠিয়ে খামের ওপর ভুলভাবে আমাদের (বিচারপতি) ঠিকানা লিখে সরাসরি প্রতিবেদন পাঠিয়েছে। এখানে কোনো পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি। সাবেক এসপি মোক্তার হোসেন পিপিএম এর এধরনের ভুলে হাইকোর্ট ভোলার নতুন পুলিশ সুপারকে তলব করেন বলেও জানিয়েছেন আমাদের হাই কোর্ট প্রতিনিধি।

SHARE