মনপুরার চর নিজামের সাড়ে ৫ হাজার মানুষের অভিযোগ চেয়ারম্যান জাকিরের বিরুদ্ধে,

জসিম রানা মনপুরার চর নিজাম থেকে ফিরে॥

ভোলার মনপুরা উপজেলার ৩নং উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের কালকিনীর চর-নিজামের সাড়ে ৫ হাজার মানুষের বসবাস। এলাকাবাসি তীর ছুড়লেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে।

চরনিজামের সুবিধা বঞ্চিত অসহায় মানুষদের অভিযোগ সূত্রে যা জানা গেছে, জাকির চেয়ারম্যান নির্বাচনের পরে চরের মানুষের সুখ-দুঃখ দেখার জন্য একবারও জানয়নি । তিনি মাঝে মধ্যে গিয়েছেন, তার গরু-মহিষ ও অবৈধভাবে দখল করা জায়গা জমি ভোগ করার জন্য। এলাকা ঘুড়ে জানাগেছে, চর নিজামবাসী, জেলে ভাতা, বয়স্ক ভাতা, পঙ্গু ভাতা, বিধবা ভাতা, বিজিডি, ভিজিএফসহ বর্তমান সরকারের সকল সুবিধা থেকে সম্পূর্ণ রূপে বঞ্চিত রয়েছে। অন্যদিকে সাড়ে ৫ হাজার মানুষের জন্য গভীর নলকুপ রয়েছে মাত্র ৩টি। নলকুপের অভাবে খাল বিলের পানি খেয়ে দিনে দিনে অসুস্থ্য হয়ে পরছে চরবাসী। সেখানে স্বাস্থ্য ক্লিনিক নেই একটিও। মাত্র একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২জন শিক্ষক দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। প্রায় দিনই বন্ধ থাকে বিদ্যালয়টি। এতে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চরের কোমলমতি শিশুরা। চরবাসীর চলা-ফেরার জন্য নেই কোন রাস্তাঘাট। প্রধান মন্ত্রীর অঙ্গীকার, ঘরে ঘরে আলো, চরনিজামে সোলারের আলো থেকেও বঞ্চিত এলাকাবাসী। উল্লেখ্য চর নিজামবাসী জাকির চেয়ারম্যানের জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেতে, কিছুদিন পূর্বে একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। তারা আর থাকতে চায়না মনপুরা উপজেলার উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের সাথে। কারণ চরনিজাম থেকে মনপুরার দূরত্ব ৩৫ কিঃ মিঃ। এতে তাদের যাতায়াতের দ্রুত কোন ব্যবস্থা না থাকাতে দিনের পর দিন পোহাতে হচ্ছে চরম দূর্ভোগ। যেমন জরুরী ভিত্তিতে হাসপাতালে নিতে পারছে না কোন মুমর্ষ রুগীকে, ব্যবসা-বাণিজ্য-কৃষি কাজ অচল। অন্যদিকে সু-শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশুরা। নানা দূর্ভোগের কারণে, সম্মিলিত চরবাসী চরনিজাম থেকে মাত্র ১১ কিঃ মিঃ দুরে ঢাল চরের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে কাটাতে চাচ্ছে তাদের বাকি জীবন। কিন্তু এ বিষয়টি সহজ ভাবে মেনে নিতে পারছে না স্বার্থ লোভী জাকির চেয়ারম্যান। সে বার বার প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে তয়-তদবীর চালিয়ে বাঁধাগ্রস্ত করছে চরবাসীকে। জানাগেছে, যদি চর নিজাম ঢাল চরের সাথে যুক্ত হয় তবে জাকির চেয়ারম্যানের স্বার্থে ব্যাঘাত ঘটবে ব্যাপক ভাবে। আমাদের চোঁখে চর নিজামবাসীর জীবন ধারণের জন্য তেমন কোন আয়ের উৎস চোঁখে পরেনি। চোঁখে পরেছে ভূমিহীন অসহায় মানুষদের মানবেতর জীবন। যা রোহীঙ্গাদের জীবনকেও হারমানিয়েছে। কিন্তু ওই চরে জাকির চেয়ারম্যান কয়েক হাজার গরু-মহিষ চড়াচ্ছে তার অবৈধ ভাবে দখল করা জমির উপর। জানাগেছে, যারা জাকির চেয়ারম্যানের এ অন্যায় কাজে বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে চেয়ারম্যান তার পালিত ক্যাডার বাহিনী দিয়ে বিগত দিনে ভাংচুর করেছে তাদের কয়েকশত ঘর-বাড়ী। অন্যদিকে লুটে নিয়েছে কৃষকদের ফলানো ফসল ও গরু-ছাগল। জেলে আবুল কাশেম, মোশারেফ হোসেন, শফিকুল ইসলামসহ একাধিক জেলেরা জানান, জাকির চেয়রম্যানের বিরুদ্ধে আমরা বিদ্রোহ করাতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে, মা ইলিশ অভিযানে আমাদের কার্ডধারী জেলেদের চাল দেয়া থেকে বঞ্চিত করেছে। এলাকা ঘুড়ে আরো জানাগেছে, ওই চরে ২০ থেকে ২৫ বছরের অনেক যুবক-যুবতীকে এখন পর্যন্ত ভোটার হতে সুযোগ দেয়নি জাকির চেয়ারম্যান।

উপরোক্ত বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে জরুরী ভিত্তিতে আমলে নেয়ার জন্য স্থানীয় মন্ত্রী ও প্রাসনের কাছে জোড় অনুরোধ জানান, চর নিজামের নির্যাতিত জনগন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত জাকির চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি তার বিরুদ্ধে আনিত সকল আভিযোগ অস্বীকার করেন।

(আল-আমিন এম তাওহীদ, ৩০অক্টোবর-২০১৮ইং)

SHARE