গ্রেনেড হামলা নিয়ে ‘নিষ্ঠুর রসিকতায়’ বিএনপি: কাদের

অনলাইন ডেস্ক: ভোলানিউজ.কম,

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলা নিয়ে বিএনপির বক্তব্যকে নিষ্ঠুর রসিকতা বলেছেন ওবায়দুল কাদের। ‘প্রকৃত খুনিদের বিচার চাওয়ার’ বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘এরা খুন করে খুনের বিচার চাইতে পারে।’

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত শোকদিবসে মাসব্যাপী কর্মসূচির সমাপনী আয়োজনে বক্তব্য রাখছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকার সময় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। শেখ হাসিনা বেঁচে গেলেও প্রাণ হারায় ২২ জন আর আহত হয় কয়েকশ।

প্রায় ১৪ বছর পর মামলাটির শুনানি শেষ পর্যায়ে আছে এবং আগামী মাসেই রায় হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানাচ্ছে সরকার।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই মামলার আসামি এবং তার মৃত্যুদণ্ড চেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ আর এ কারণে উদ্বিগ্ন বিএনপি।

আর রায়ের প্রাক্কাল্যে এই মামলা নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে কথার লড়াই শুরু হয়ে গেছে বরাবরের মতো।

জোট সরকারের আমলে প্রধান আসামিদেরকে বাদ দিয়ে নির্দোষ জজ মিয়াকে ফাঁসানো, আলামত নষ্টসহ নানা বিষয়ের উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ বরাবর এই হামলায় বিএনপির সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনে।

বিএনপি অবশ্য দাবি করছে, তাদের নেতা তারেক রহমানকে ফাঁসানো হয়েছে। আর ২৭ আগস্ট দলের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তারা ‘প্রকৃত অপরাধী’দের বিচারের পক্ষে। তবে সরকার ফরমায়েশি রায় বের করতে চাইছে আদালতের কাছ থেকে।

ফখরুল সেই হামলার ঘটনা নিয়ে আওয়ামী লীগকে জড়িয়েও ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। বলেন, আওয়ামী লীগের ওই জনসভা হওয়ার কথা ছিল মুক্তাঙ্গনে, কিন্তু তা কেন বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে সরানো হয়েছে।

বিএনপির বিচার চাওয়ার এই বক্তব্যকে কটাক্ষ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘২১ আগস্টের খুনিদের পৃষ্ঠপোষকরা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চায়! বিএনপি নেতারা ২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার চান। এটা কে কি বলবেন আপনি? ইতিহাসের নৃশংস বর্বোচিত হত্যাকাণ্ডের প্রতি নিষ্ঠুর রসিকতা।’

‘ধিক্কার জানাই এ রাজনীতিকে, ধিক্কার জানাই এ নোংরা রাজনীতিকে। এরা খুন করে খুনের বিচার চাইতে পারে, দুর্নীতি করে দুর্নীতির বিচার চাইতে পারে, দণ্ডিত হয়েও নিরাপদ বলে নিজেদের জাহির করতে পারে’-বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন আওয়ামী লীগ নেতা।

‘বিএনপি নয়, ছদ্মবেশী শত্রুরা বেশি সক্রিয়’

বিএনপি-জামায়াতের চেয়ে ‘ছদ্মবেশি শত্রুরা’ বেশি সক্রিয় বলেও মন্তব্য করেন কাদের।

‘এরাই গুজব সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে। তারা সুশীলে আছে, গণমাধ্যমে আছে। গণমাধ্যমের একটি অপপ্রচার করছে।’

যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য সারা দুনিয়ায় প্রচার চলেছে উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘জিয়াউর রহমানকে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক বানানোর জন্য সব ধরনের চেষ্টা করেছেন, নিরীহ শিশুদের যুক্তিসঙ্গত সামাজিক আন্দোলনকে নিয়ে ছদ্মবেশী কুচক্রীদের সঙ্গে মিলিত হয়ে বললেন বাংলাদেশে গণহত্যা চলেছে।’

‘এ অপপ্রচার নোবেল বিজয়ীদের পর্যন্ত বিবৃতি দিতে প্রলুব্ধ করেছে। এ কুচক্রি মহলের কতটা আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক রয়েছে সেটা এখন দিবালোকের মতো পরিষ্কার।’

এই ছদ্মবেশী চক্র এখন ক্ষমতা চায় না উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘কারণ, তাঁরা জানে নির্বাচন হলে ক্ষমতায় যেতে পারবে না। তাই চক্রান্তের চোরগলি বাছাই করেছে। দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে শেখ হাসিনাকে হঠানোর ষড়যন্ত্র করছে।’

যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, আনোয়ারুল ইসলাম, আমজাদ হোসেন, বেলাল হোসাইন, আতাউর রহমান, মাহবুবুর রহমান হিরণ, যুবনেতা কাজী আনিসুর রহমান, মিজানুল ইসলাম মিজু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট প্রমুখ। সভা সঞ্চালনা করেন ইকবাল মাহমুদ বাবলু।

(আল-আমিন এম তাওহীদ, ২৮আগস্ট-২০১৮ইং)

SHARE