তিন সিটিতে বিদ্রোহী ও শরিক দলের প্রার্থীদের নিয়ে বিপাকে বিএনপি(ভিডিও)

নিউজ ডেস্ক: ভোলানিউজ.কম,

খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়ের পর এবার সিলেট, রাজশাহী ও বরিশাল সিটি নির্বাচনে দলের ও জোটের বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে বিপাকে পড়েছে বিএনপি। সূত্রের খবরে জানা গেছে, যোগ্য ও জনবান্ধব নেতাদের বাদ দিয়ে অযোগ্য ও অগ্রহণযোগ্য প্রার্থীদের দলীয় প্রতীকে মনোনয়ন দেওয়ায় তিন সিটিতে বিএনপি ও জোটের বিদ্রোহী প্রার্থীরা স্বতন্ত্র ব্যানারে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিদ্রোহীদের এমন সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছে বিএনপি।

সিলেট বিএনপির গোপন সূত্রে জানা গেছে, সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচনী দৌড়ে পিছিয়ে ছিলেন। মূলত তার অজনপ্রিয়তা, স্বেচ্ছাচারিতা, নেতা-কর্মীদের সাথে সমন্বয়হীনতা, দলীয় কর্মকাণ্ডে লুকিয়ে থাকার কারণে মনোয়ন বঞ্চিতদের তালিকায় ছিলেন আরিফুল হক। তবে সব জল্পনা-কল্পনা ছাপিয়ে লন্ডনে ১০ কোটি টাকা পাঠিয়ে শেষবারের মত নির্বাচন করার অনুমতি পেয়েছেন। আরিফুল হকের মনোনয়ন পাওয়ায় ক্ষিপ্ত পুরো সিলেট বিএনপি। বিএনপি এবং জোটের কর্মীরা সম্পূর্ণভাবে আরিফুল হককে প্রত্যাখ্যান করেছেন। ক্ষোভের বহি:প্রকাশ ঘটাতে বিএনপি ও জোটের একাধিক নেতা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন এবং মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক জলঘোলা হয়েছে।

বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ফেনালাপ করেও বিষয়টিতে কোন সমাধানে আসতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত লন্ডন থেকে তারেক রহমান ফোন করে আরিফুল হকের পক্ষে কাজ করার আদেশ দেন। কিন্তু বিদ্রোহী প্রার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করে নির্বাচনে অটল থাকার ঘোষণা দিয়েছেন।
একপর্যায়ে তারেক বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী ও সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম ও জামায়াতের সিলেট আমির এহসানুল মাহবুব জুবায়েরকে প্রার্থীতা বর্জনের আদেশ দেন। উভয়ে তারেক রহমানের আদেশ অমান্য করে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন।

তারেক ফোনে গালিগালাজ করে তাদের কারণে আরিফুল হক পরাজিত হলে দেখে নেওয়ারও হুমকি দেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত বদরুজ্জামান সেলিম এর ঘনিষ্ঠ কর্মী আবুল হোসেন বিএনপি নেতা সেলিমের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, লন্ডনে টাকা পাঠালে নির্বাচন করা যাবে। সারা জীবন কি সেলিম ভাই কলুর বলদ হয়ে খেটেই যাবেন। সেলিম ভাই নির্বাচন করবেন। আমরা আরিফুল হককে উচিত শিক্ষা দিতে চাই। আরিফুল হক যোগ্য নেতা নন। তারেক বারবার টাকা খেয়ে ভুল করছেন।

একই অবস্থা দেখা গেছে রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে। এই দুটি করপোরেশনেও বিএনপি ও জোটের শরিকদলগুলো তারেক রহমানের আদেশ অমান্য করে নিজেরাই প্রার্থী ঠিক করছেন। রাজশাহীতে গুঞ্জন রয়েছে যে, মহনগর নেতা নাদিম মোস্তফা এবার বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নাদিমের বক্তব্য হচ্ছে, সারাজীবন দল করে শুধু জেল-জুলুম কপালে জুটেছে। এবার একটু গদিতে বসতে চাই। এছাড়া সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনুও দলের বিপক্ষে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার মৌখিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে গোপন সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া বরিশাল সিটি নির্বাচনেও বিদ্রোহী ও শরিক দলের একাধিক প্রার্থীদের নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে বিএনপি। তারা কোনভাবেই দলের নির্দেশনা মানতে চাচ্ছেন না। নির্বাচন করেই ফয়সালা করতে আগ্রাহী বিদ্রোহীরা।

(আল-আমিন এম তাওহীদ, ১জুলাই-২০১৮ই)

SHARE