প্রধানমন্ত্রীকে এসএমএস করে কপাল খুলল সামাদের

অনলাইন ডেস্ক: ভোলানিউজ.কম,

অটোরিকশা হারিয়ে বিপাকে পড়া আবদুস সামাদকে হতাশার সাগর থেকে টেনে তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসএমএস পেয়ে তিন দিনের মধ্যেই শ্রমজীবী মানুষটির জন্য পাঠিয়েছেন একটি অটোরিকশা।

আর এই সহায়তা পাওয়ার পুরো কাহিনিটিই চমকপ্রদ। বিষয়টি এতটাই অবিশ্বাস্য ঠেকছে খোদ সামাদের কাছে যে, তিনি ভাবছেন পুরোটাই স্বপ্ন।

না, সরকার প্রধানের কাছে সশরীরে আসেননি সামাদ, অন্য কারও মাধ্যমে দূতিয়ালিও করেননি। প্রধানমন্ত্রী কয়েক বছর আগে তার যে মোবাইল ফোন নম্বর গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, সেই নম্বর জোগাড় করে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েছিলেন। আর তাতেই মেলে সাড়া।

ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার আব্দুস সামাদ তার জীবিকার একমাত্র অবলম্বন অটোরিকশাটি হারিয়ে ফেলেন গত ২৮ মে। গ্যারেজ থেকে রিকশা চুরি হয়ে যাওয়ার পর পরিবারের জন্য অর্থের সংস্থান করতে পারছিলেন না তিনি।

আর এই বিষয়টি হারিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চান সামাদ। ভেবেছিলেন কোনোভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার নিবেদন পৌঁছলে তার বিপদ কাটবে।

বঙ্গবন্ধু কন্যা এর আগেও সামাদের মতো মানুষের ডাকে সাড়া দিয়েছেন, এবারও নিরাশ করেননি। তবে সেই আবেদনে এত দ্রুত সহায়তা মিলবে, সেটি ধারণা ছিল না তার।

গত ১৮ জুন পাঠানো এসএমএসে সামাদ লিখেন, ‘মা, তুমি সারা দেশের মা। আমাকে একটু সাহায্য করুন।’

আর দুই দিন পর ২০ জুন বুধবার সামাদের বাড়িতে পুলিশ হাজির। তারা জানতে চান, কোনও এসএমএস পাঠিয়েছেন নাকি।

সামাদ বলেন, ‘ফয়লা (প্রথমে) ডরাইছি। পরে কথাবার্তা শুইন্যা বুঝছি, আমাকে সাহাইয্য করত আইছে পুলিশ।’

এরপর আজ বৃহষ্পতিবার ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার তার অফিসে ডেকে একটি অটো রিক্সা তুলে দেন।

সামাদ বলেন, ‘আমি স্বপ্নেও ভাবতারছি না অত প্রধানমন্ত্রী আমারে অত তাড়াতাড়ি সাহাইয্য করব। অহনও মনে অইতাছে স্বপ্ন দেখতাছি।’

ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘এসএমএসটি নজরে আসার পরপরই সাহায্যের নির্দেশনা পাঠান প্রধানমন্ত্রী। আর আমরা আবদুস সামাদকে খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি।’

সামাদ জানান, তিনি ধার দেনা করে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে অটোরিকশাটি কিনেছিলেন। এটি চালিয়ে স্ত্রী, স্কুলপড়ুয়া দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে চলে তার সংসার। কিন্তু জীবিকার অবলম্বনটি হারিয়ে যাওয়ার পর তার নিজের জন্য পর্যাপ্ত অর্থের যোগান যেমন কষ্টকর হয়ে গিয়েছিল, তেমনি মাথায় চেপেছিল ঋণ পরিশোধের বোঝা।

সামাদ জানান, তিনি কোনো উপায় না দেখে নিজের মোবাইলে গুগলে কোনো মন্ত্রী বা এমপির নাম লিখে নম্বর সার্চ করেন। কিন্তু পেয়ে যান প্রধানমন্ত্রীর নম্বর। ভাবেন শেখ হাসিনা অনেককেই সহায়তা করেন,  এসএমএসটি পেলে হয়ত তাকেও ফেরাবেন না।

প্রধানমন্ত্রী বরাবর বলেন, তার গণভবনের দুয়ার দেশের সব মানুষের জন্যই খোলা। দেশবাসীকে নির্ভয়ে সেখানে যেতেও নানা সময় পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

আবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে নানা সময় নানা দাবি পূরণ হয়েছে। ২০১৬ সালের আগস্টে পটুয়াখালীর শিশু শীর্ষেন্দু বিশ্বাস পায়রা নদীতে সেতু করার আবেদন জানিয়ে চিঠি লিখে শেখ হাসিনার কাছে। আর এরপর তিনি এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দেন।

গত এপ্রিলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের বাসিন্দা দ্বিতীয় শ্রেণি পড়ুয়া শিশু সৈয়দা রওনক জাহান সেঁজুতি প্রধানমন্ত্রীকে ভালোবেসে চিঠি লিখেছিল। প্রধানমন্ত্রী সেই চিঠি পড়ে মুগ্ধ হয়ে জবাবও দিয়েছিলেন।

(আল-আমিন এম তাওহীদ, ২১জুন-২০১৮ই)

SHARE