ফখরুলের বক্তব্যে বিব্রত বিএনপি

ডেস্ক: অনলাইন-ভোলানিউজ.কম,

গত ৮ ফেব্রুয়ারী থেকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের সাজা প্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দী আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সম্প্রতি কারাগারে খালেদার সাথে দেখা করতে গিয়ে স্ববিরোধী বক্তব্য দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রাজনৈতিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঈদের দিনে কারাবন্দী খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন মির্জা ফখরুল সহ বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতাকর্মীরা। খালেদা সাথে দেখা করতে যাওয়ার ব্যাপারটাকে রাজনৈতিক ইস্যু হিসাবে তৈরী করতে পূর্বঅনুমতি ছাড়াই খালেদার সাথে দেখা করতে গিয়েছিল ফখরুল সহ একধিক নেতাকর্মী। অনুমতি না থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই খালেদার সাথে দেখা করার সুযোগ পাননি ফখরুলরা। শুধু মাত্র খালেদার স্বজনরা পূর্ব অনুমতি নিয়ে দেখা করতে গেলে তাদেরকে দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

এই বিষয়ে ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার ইব্রাহিম খান বলেন, “যাদের যাওয়ার অনুমতি আছে তারা যাবেন, যাদের অনুমতি নেই, তারা যাবেন না। আমরা কাউকে আটকাইনি, তবে সেখানে যাতে গ্যাদারিং না হয়, সেজন্য নিরাপত্তার স্বার্থে আমাদের ব্যবস্থা নিতে হয়,”।

অনুমতি ছাড়া দেখা করতে গিয়ে বিফল হওয়ার পর ফখরুল অভিযোগ করেন, কারাগারে ইঁদুর, তেলাপোকা, ছারপোকার পাশাপাশি বিষধর বিছাও রয়েছে যাতে তাদের নেত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

তিনি বলেন, ম্যাডামের রুমে বড় বড় ইঁদুর দৌড়ায়, এতগুলো বেড়াল ওখানে যারা ইঁদুর ধরে। আপনারা শুনলে হতবাক হবেন যে, ম্যাডামের ঘরের মধ্যে ওই বেড়াল বড় ইঁদুর ধরেছে। তারপরে ম্যাডাম অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মানসিক দিক দিয়ে। উনি তো এসব দেখতে অভ্যস্ত নন। তেলাপোকা, ছারপোকা এটা কমন ব্যাপার। আরও আছে বড় বড় বিছা।”

ফখরুলের এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপস্থিত সাংবাদিকরা তাকে জিজ্ঞেস করেন তিনি কারাগারে না গিয়েও কিভাবে এই অভিযোগগুলো করছেন। সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে আমতা আমতা করলেও কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি বিএনপির মহাসচিব।

এদিকে ফখরুলের এই স্ববিরোধী বক্তব্যে বিব্রত হয়ে পড়েছে বিএনপি। ঈদের দিন ফখরুলের সাথে কারাফটকে উপস্থিত একাধিক সিনিয়র নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা ফখরুল সাহেবের মত এমন প্রবীণ রাজনীতিবিদের কাছ থেকে এমন উদ্ভট স্ববিরোধী বক্তব্য আশা করিনি। তারা বলেন, যেখানে আমাদেরকে কারাগারে প্রবেশের অনুমতিই দেওয়া হয়নি সেখানে তিনি কিভাবে বলেন যে, ম্যাডামের রুমে ইঁদুর, বিড়াল, বিছা আছে। উনার কাছ থেকে দল আরো দায়িত্বশীল বক্তব্য আশা করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আরেক সিনিয়র নেতা বলেন, আমরা অনেকেই পূর্ব অনুমতি নিয়ে ম্যাডামের সাথে ঈদের দিন দেখা করে দিক নির্দেশনা নিতে চাচ্ছিলাম সেখানে উনার পরামর্শ মোতাবেক রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যে অনুমতি ছাড়াই দেখা করতে এসেছি, যাতে করে পুলিশ আমাদের আটকিয়ে দিলে আমরা দেশবাসীর কাছে সরকারের অমানবিক আচরণের বিষয়ে বক্তব্য দিতে পারি। অথচ ফকরুল সাহেব এমন বক্তব্য দিলেন যে উল্টো আমরাই বিব্রত হয়ে পড়েছি। দলের জন্য এটা খুব হতাশাজনক।

এদিকে ঈদের দিন দুপুরে খালেদার ২০ জন স্বজন খালেদার সাথে দেখা করতে কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করেন। খালেদা তাঁর স্বজনদের বুকে জড়িয়ে নিয়ে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। খালেদা জিয়া ঈদের দিনে যেসব খাবার পছন্দ করেন, সেসব খাবার রান্না করে তার স্বজনরা কারাগারে নিয়ে গিয়েছিলেন। কারাগারে তাদের সামনেই খালেদা তার পছন্দের খাবার দিয়ে দুপুরের খাবার সম্পন্ন করেন।

(আল-আমিন এম তাওহীদ, ২০জুন-২০১৮ই)

SHARE