র‌্যাব অফিসের পাশে মাদক ফেলে না গেলে… কি হয়

অনলাইন ডেস্ক, ভোলানিউজ.কম,

মাদকসেবী ও বিক্রেতাদেরকে র‌্যাব কার্যালয়ের আশেপাশে মাদক ফেলে রেখে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বাহিনীটির মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। আর মাদক না ছাড়লে পরিণতির জন্য তৈরি থাকতে বলেছেন তিনি।

সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কড়া হুশিয়ারি দিলের বেনজীর।

সম্প্রতি র‌্যাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে গিয়ে মাদকের বিরুদ্ধেও জঙ্গিবিরোধী অভিযানের মতো কঠোর অভিযানের নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এই নির্দেশের পর র‌্যাব গত ৪ মে থেকে এই বিশেষ অভিযান শুরু করে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। আর প্রথম নয় দিনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে এক হাজার ৪১৫ জন মাদকসেবী ও বিক্রেতাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। জরিমানা আদায়করা হয়েছে ২০ লাখ টাকার। এই সময় ৩৮১ জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ১৪ বছরে র‌্যাব মোট ৬৮ হাজার ৪৯৮ জন মাদকসেবী ও বিক্রেতাকে গ্রেপ্তার করেছে বলেও জানান বেনজীর।

র‌্যাব প্রধান বলেন, ‘যাদের কাছে অবিক্রিত ড্রাগ (মাদক) রয়েছে তারা আমাদের ক্যাম্পের আশপাশে সেসব ফেলে রেখে যাবেন। প্রত্যাশা করছি যারা ড্রাগ  গ্রহণ করেন তারা ছেড়ে দেবেন। যারা খুচরা বিক্রি করেন তারা বাদ দেবেন। যারা ডিলার (পরিবেশক) হিসেবে সরবরাহ করেন তারা সব বন্ধ করবেন। সবাই সাবধান হবেন।’

মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দুটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বেনজীর আহমেদ। বলেন, ‘আমাদের দুটো জায়গায় কাজ করতে হবে। ডিমান্ড (চাহিদা) ও সাপ্লাই (যোগান) বন্ধ করা। সেবনকারী ও বিক্রেতারা মাদক ছেড়ে দেবেন। পুনর্বাসনকারী প্রতিষ্ঠানকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।’

মাদকের বিরুদ্ধে সারাদেশে অভিযান চালু থাকবে জানিয়ে র‌্যাব প্রধান বলেন, ‘আমাদের এই বিশেষ অভিযানের কার্যক্রমটা হবে মূলত ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে। অপারেশনের মাধ্যমে মাদক বিক্রেতা ও গ্রহীতাদের সাজা দেওয়া হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী নিয়মিত আইনেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

‘মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসন ম্যাজিকের মতো নিয়ন্ত্রণে আনার কথা বলছি না, তবে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এটা নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করি।’

সারাদেশে মাদকবিরোধী অভিযানে জেলা প্রশাসকদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অনুরোধ করেন র‌্যাব প্রধান। বলেন, ‘যে সমস্ত দেশপ্রেমিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আছেন, আমরা চাইব এই মাদকের আগ্রাসন থেকে নিস্তার পেতে সবাই মিলে কাজ করে যাব।’

মাদককে জাতীয় সমস্যা আখ্যা দিয়ে মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে সবার সহযোগিতাও চান বেনজীর। বলেন, ‘সবার চেষ্টায় সর্বগ্রাসী এ সমস্যাকে রুখতে হবে। মাদকের শেকড় মূলোৎপাটন করা হবে। তারা যাতে আইনের কোনো ফাঁক দিয়ে পার পেতে না পারে এজন্য আইনজীবীদেরও সহযোগিতা প্রয়োজন।’

মাদক পরিবহনে যেন গাড়ি ব্যবহৃত হতে না পারে, সে জন্য গাড়ির মালিকদেরকেও সতর্ক করেন র‌্যাব ডিজি। বলেন, ‘গণপরিবহনের পাশাপাশি অনেক সরকারি-বেসরকারি গাড়ি ব্যবহৃত হয়। মালিকরা তাদের গাড়ি কোন কাজে ব্যবহৃত হয় বিষয়টা খেয়াল রাখবেন।’

নানা সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও মাদক বিক্রিতে জড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বেজনীর বলেন, ‘‘আশা করব তারা সতর্ক হবেন, এ পথ থেকে সরে আসবেন।’

অন্য এক প্রশ্নে বেনজীর বলেন, ‘র‌্যাবের কোনো সদস্য মাদকের সাথে জড়িত এখন পর্যন্ত এরকম কোনো অভিযোগ নেই।’

মাদক নির্মূলে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, শিক্ষক, ধর্মীয় নেতা, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, সামাজিক মাধ্যমের অ্যাকিটিভিস্ট ও অভিভাবকসহ সমাজের সব স্তরের মানুষের সহযোগিতাও চান র‌্যাব প্রধান।

(আল-আমিন এম তাওহীদ, ১৪মে-২০১৮ইং)

SHARE