জয় দেখছেন খালেক-মঞ্জু দুজনই

অনলাইন ডেস্ক:,ভোলানিউজ.কম,

রাত পোহালেই খুলনা সিটি করপোরেশনের ভোট। খুলনাসহ দেশেবাসীর চোখ এখন এই ভোটের দিকে। তালুকদার আবদুল খালেক নাকি নজরুল ইসলাম মঞ্জু জিতবেন, সেই হিসাবে কষছেন দুই শিবিরের সমর্থকদের পাশাপাশি দল নিরপেক্ষরাও। যদিও দুই প্রার্থীই দাবি করছেন এগিয়ে থাকার। দাবি করছেন নিশ্চিত জয়ের্।

ভোটে মেয়র পদে আছেন পাঁচজন প্রার্থী। তবে মূল লড়াই হবে নৌকা মার্কা নিয়ে আওয়ামী লীগের খালেক ও ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির মঞ্জুর মধ্যে। বাকি তিন প্রার্থী আলোচনাতেই নেই।

স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে হলেও ভোটে জাতীয় নির্বাচনের আবহ। খুলনার পাশাপাশি দৃষ্টি সারাদেশের মানুষের। দুই প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে কার জয় হয়, সেটির প্রভাব নিশ্চিতভাবেই পড়বে জাতীয় নির্বাচনে।

জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ সরকার ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ডিসেম্বরে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচন সামনে রেখে খুলনা সিটি ভোটেই এখন জাতীয় নির্বাচনের আবহ। পরিস্থিতি কোন দিকে যায় বলা মুশকিল, সেজন্য আগামীকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’

নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা পাঁচ লাখের কিছু কম। এদের মধ্যে নতুন ভোটার আর শ্রমিক মিলিয়ে এর লাখ মানুষের মতামত কোন দিকে যায় সেটিই জয় পরাজয়ের মীমাংসা করবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগ দাবি করছে, ভোটারদের টান নৌকার দিকে। তারা বলছে, এখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় নৌকা মার্কার সরকার। আর খুলনা নগরীর উন্নয়ন দরকার। আর উন্নয়ন করতে কলে সরকার দলীয় প্রার্থীর কোনো বিকল্প নেই।

কাকে ভোট দেবেন?- জানতে চাইলে রিকশাচালক আইয়ুব আলী বলেন, ‘দেশের রাজা শেখ হাসিনা। অন্য কেউ মেয়র হইয়া কী করব?’

আইয়ুব আলীর বাড়ি সাতক্ষীরার শ্যামনগর। ১০ বছর ধরে খুলনা নগরীতে রিকশা চালান। এই নগরীর ভোটার তিনি।

প্রার্থী কে জনপ্রিয়? এমন প্রশ্ন করতেই অকপটে বলে ফেললেন, ‘দুই জনই জনপ্রিয়। কেউ কারো চেয়ে কম না। তবে রাজা যিনি তার প্রার্থী নির্বাচিত হলেও এই শহরের উন্নয়ন হবে।’

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আমজাদ এবার প্রথম  ভোটার হয়েছেন। ভোট দেবেন ভেবে খুবই উত্তেজিত তিন।

কাকে ভোট দেবেন এমন প্রশ্নে আমজাদ বলেন, ‘কালকের ভোটে তো আর সরকার পরিবর্তন হবে না। ফলে  এই নগরীর উন্নয়নের জন্য যিনি ভালো হবেন তাকেই দেব।’

তবে বিএনপি বলছে, বর্তমান সরকার দেশের জন্য ভালোর চেয়ে মন্দ করেছে বেশি। এ কারণে খুলনাবাসী তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করবে।

নির্বাচন কমিশন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের নির্বাচনের পর খুলনায় ভোটার বেড়েছে ৫৩ হাজার। আর গত ১০ বছরে নতুন ভোটার বেড়েছে কমপক্ষে এক লাখ।

এদের সবাই বয়সে তরুণ। সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত না হলেও এরা অধিকার সচেতন এবং শিক্ষিত শ্রেণির। যেকারণে তারা দলীয় দৃষ্টির বাইরে থেকেও নগরীর উন্নয়নের ভোটের দিকে বাড়তি নজর দেবেন।

ব্যাংক কর্মকর্তা আজিজুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ভোটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। তবে বর্তমান মেয়র মনিরুজ্জামান মনি দল ক্ষমতায় না থাকায় তেমন কাজ করতে পারেনি। আমি মনে করি এসব বিবেচনায় থাকবে।’

এ বিষয়টি মাথায় রেখেই দুই প্রার্থী প্রচারণার সময় তরুণদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

জানতে চাইলে নৌকার প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আগামী দিনে মেয়র কে হবে সে সিদ্ধান্ত নেবে তরুণরা। এখনকার তরুণরা রাজনীতি সচেতন।’

ধানের শীষের প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আগামী দিনের কথা চিন্তা করেই খুলনার ৫২ হাজার তরুণ নগর পিতা মনোনীত করবেন। তরুণরাই আমাদের মূল শক্তি।’

খুলনা সিটিতে মোট ভোটার চার লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ৪৮ হাজার ৯৮৬ জন ও নারী দুই লাখ ৪৪ হাজার ১০৭ জন। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা চার হাজার ৯৭২ জন। নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ২৮৯টি।

এর মধ্যে দুটি ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে। এ দুটি কেন্দ্রের ১০টি বুথের দুই হাজার ৯৭৮ ভোটার ইভিএমে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।

একজন মেয়র ছাড়াও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরসহ মোট ৪১ জন কাউন্সিলরকে বেছে নেবেন ভোটাররা।

(আল-আমিন এম তাওহীদ, ১৪মে-২০১৮ইং)

SHARE