অনলাইন ডেস্ক: ভোলানিউজ.কম,
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও তৃতীয় শক্তি হওয়ার বাসনায় গড়ে উঠা যুক্তফ্রন্টের অন্যতম শরিক মাহমুদুর রহমান মান্না একটি আন্দোলনের স্বপ্ন দেখছেন। তার দাবি, দেশে দুর্নীতি হলেও কোনো মামলাই হচ্ছে না। আর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজায় ভীষণ নাখোশ তিনি।
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনায় বক্তব্য রাখছিলেন সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মান্না। তার লেখা বই ‘বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতি অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যত’ নিয়ে লেখা এই আলোচনা হয়।
যুক্তফ্রন্টের আরেক শরিক বিকল্প ধারার প্রেসিডেন্ট বদরুদ্দোজা চৌধুরীও এই আলোচনায় অংশ নেন। মান্না এবং যুক্তফ্রন্টের সাম্প্রতিক নানা অনুষ্ঠানের মতো আজও এই আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির একজন নেতা, আমান উল্লাহ আমান।
মান্না বলেন, ‘এখন দরকার একটা আন্দোলন, ৬৯ এর গণভুত্থান এসেছিল আন্দোলনের মধ্য দিয়ে । এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাওয়ার শ্রেষ্ঠ সময় । এটাকেই আমি সামনে নিয়ে আসতে চেয়েছি।’
বাংলাদেশের সব সমস্যার একটাই সমাধান আছে বলে মনে করেন নাগরিক ঐক্যের নেতা। বলেন, ‘সেটা হলো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন।’
‘কোটা সমস্যা, ভ্যাট সমস্যা, তার চেয়ে বড় সমস্যা আমাদের গণতন্ত্রের সমস্যা। আমি বলব, সেই সমস্যার কথা যেটা বললে সব সমস্যার সমাধান হবে। এখন দরকার একটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন।’
দেশে এখন কোন গণতন্ত্র নেই দাবি করে মান্না বলেন, ‘কোটা আন্দোলনকারী ছাত্রীদের উপর যে নির্যাতন করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে একটা মামলা হয়নি, সেই সাথে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে তারও একটি বিচার করা হয়নি। তাহলে কীভাবে বলব দেশে গণতন্ত্র আছে।’
সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনের পর সরকার নাটক করেছে বলেও অভিযোগ করেন মান্না। বলেন, ‘পার্লামেন্টের মধ্যে একটা বক্তৃতা (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১১ এপ্রিলের বক্তব্য) দিয়ে সব আটকে দেয়া হলো।’
গাজীপুরের নির্বাচন স্থগিত হওয়া, খুলনায় রিটার্নিং কর্মকর্তা থাকার পরও নির্বাচন কমিশনের একজন যুগ্ম সচিবকে সেখানে পাঠানোরও সমালোচনা করেন নাগরিক ঐক্যের নেতা।
মান্না বলেন, ‘একের পর এক ব্যাংকগুলো লুট হয়ে যাচ্ছে, কত বড় নির্লজ্জ বিষয় যারা এরকম করে ব্যাংক লুট করছে তাদের বিরুদ্ধে কোন তদন্ত নাই, মামলা নাই। অথচ মাত্র দুই কোটি টাকার মামলায় তিয়াত্তুর বছর বয়সের এক নেত্রীকে মাটিতে শুইয়ে রেখেছে।’
‘তারপরে পাওয়ার যোগ্য জামিন বন্ধ করে রেখেছে। অথচ হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে তাদের নামে মামলার কোন লক্ষণ নাই। বরং তাদেরকে ভর্তুকি দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা করছে। এ জন্য এই সরকারকে অবৈধ সরকার বলতে হবে।’
সাবেক রাষ্ট্রপতি বিকল্পধারার নেতা এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘ছাত্ররাজনীতি এখনো মারা যায়নি। কোটার জন্য আন্দোলন হয়েছে তা থেকেই দেখা যায়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিলে রাজনীতি আরও স্বচ্ছ হতো বলে মনে করেন বি চৌধুরী। বলেন, ‘যদি ইউনিভার্সিটিগুলোয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন হতো তাহলে আজ দেশের নেতৃত্বের দেউলিয়াপনা সৃষ্টি হত না।… সব বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন দিতে হবে, আদর্শ নেতা বের করে আনতে হবে।’
‘এভাবে নেতিবাচক নেতৃত্ব দিয়ে দেশ চলতে পারে না। যেখানে গণতন্ত্র ধ্বংস করে দেয়া হয়, সেখানে কীভাবে নেতা বের হয়ে আসবে? সবাইকে এক সঙ্গে দাঁড়াতে হবে। জনগণকে বলতে হবে অতীতের ভুল ক্ষমা করে দিন।’
সাবেক রাষ্ট্রপতির দাবি, ‘একটি মন্ত্রণালয়ও নেই যেটা দুর্নীতিমুক্ত নয় । সব ক্ষেত্রে ঘুষ দিয়ে চাকরি নিতে হয়, কাজ করাতে হয়।’ বলেন, ‘আজ দেশের কি অবস্থা! সারাদেশে রাতের আঁধারে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য হয় । দেশের সবাইকে এক হয়ে বলতে হবে আমরা আর কোনদিন সন্ত্রাস করব না, দুর্নীতি করব না, শপথ নিতে হবে।’
সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ বলেন, ‘আমাদের তরুণ প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে । তারা অনেক কিছুই জানে না।’
‘দেশের জন্য যার যতটুক অবদান তা স্বীকার করে আমরা দেশকে এগিয়ে নেব।’
(আল-আমিন এম তাওহীদ, ১১মে-২০১৮ইং)