ভোলায় কিশোর গ্যাং এর বেপরোয়া মহড়া

  • টিপু সুলতানঃ

ভোলায় রাস্তা একটু ফাঁকা থাকলেই টিপুবেপরোয়া গতির মোটরসাইকেল চালাচ্ছে কিশোর গ্রুপ। ভোলায় কর্মব্যস্ত জীবনে মোটরসাইকেল গতিতে চালানোর সুযোগ কম। তবে রাস্তা ফাঁকা পেলেই বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল মহড়া দিচ্ছে কিশোর গ্যাং গ্রুপ। রাস্তায় আতঙ্ক তৈরি করেছে এই গ্রুপ।

শুক্রবার শহরের বাংলা স্কুল মোড়, সরকারি স্কুল সড়ক, যুঘিরঘোল, কালি বাড়ি রোড, সরকারি কলেজ, সরকারি স্কুল মাঠ, কালিনাথ বাজার সড়ক, সদর রোড, চৌমাথাসহ শহরের বেশ কিছু এলাকায় এ দৃশ্য দেখা গেছে। এ ছাড়া ওই সব রাস্তায় বেশিরভাগ মোটরবাইক আরোহীর মাথায় হেলমেটও নেই। সাধারণত কিশোর বয়সের ছেলেদের মোটরসাইকেল বেপরোয়া গতিতে চালাতে দেখা গেছে। আর এতে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

ভোলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, প্রতিদিনই হাসপাতালের সার্জারী ওয়ার্ডে মটরসাইকেল দূঘটনায় আহত হয়ে ২/৩ জন ভর্তি হচ্ছে। আর এসব মোটরসাইকেল আরোহীদের বয়স ১৫ থেকে ১৮ বছরের কিশোর বেশি। চিকিৎসকরা আরো বলেন, যুবকদের বেপরোয়া গতিতে চালানোর কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে বেশি। অনেক যুবকদের আমরা এখান থেকে চিকিৎসা দিয়ে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে-বাংলা মেডিকেল কলেজ ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করে থাকি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, জরুরি বিভাগে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার আহত রোগীই বেশি আসছে। বেশিরভাগ যাত্রীর মাথায় হেলমেট না থাকায় দুর্ঘটনায় বেশি আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে। ভোলা সরকারি কলেজের এক শিক্ষক বলেন, রাস্তায় এখন বের হলেই দেখা যায় বিভিন্ন মোড়ে দামি মটরসাইকেল নিয়ে আড্ডা দিচ্ছে কিশোর গ্যাং গ্রুপ।

স্কুল ছুটির সময় এবং বিকাল হলেই রাস্তায় চলে কিশোর গ্যাং গ্রুপের মটরসাইকেল চলানোর প্রতিযোগীতা। ভোলা সদর হাসপাতালের সহকারী সিভিল সার্জন মোঃ আলম আহমেদ বলেন, রাস্তায় কিশোররা যেভাবে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে, তাতে আমাদের নিজেদের কাছেই আতঙ্ক লাগে। যদি দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে আরোহীর সঙ্গে রাস্তার লোকও দুর্ঘটনায় পড়বে।

তবে ট্রাফিক পুলিশ বলছে, বর্তমানে কিশোর গ্রুপ মোটরসাইকেল যেভাবে চালায়। তাতে প্রায়ই সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটে। জনগণ যদি পুলিশের ভূমিকা নীরব দেখে আইনের অপব্যবহার করে তাহলে তাদের ক্ষতি তারা নিজেরাই করবে। আমরা সবসময় মোটরসাইকেলের কাগজপত্রের প্রতি লক্ষ রাখছি, প্রায়ই কাগজপত্রহীন মোটরসাইকেলের মামলাও হচ্ছে।

এদিকে শহরবাসীর অভিযোগ বেপরোয়া মোটরসাইকেল আমাদের কাছে এখন নতুন আতঙ্কের কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

গত কয়েক মাসে শহরে ব্যাপকসংখ্যক মোটরসাইকেল ও আরোহী বেড়ে যাওয়ায় সড়ক ও ফুটপাথের যাত্রী ও পথচারীরা বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়েছেন। যানজট শহরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সড়ক ছেড়ে ফুটপাথে উঠে আসছে মোটরসাইকেল চালকরা। তরুণ আরোহীদের রাস্তায় চলছে প্রতিযোগিতা। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি ও সহজ শর্তের বিক্রয় নীতিমালার কারণে বর্তমানে মোটরসাইকেলের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে অসংখ্য মানুষের। প্রতিদিনই ভোলায় প্রায় ১০/১৫ টি নামছে নতুন মটরসাইকেল। আর রেজিস্ট্রেশনবিহীন কত মোটরসাইকেল রাস্তায় চলছে সে হিসাব কারও কাছেই নেই।

যানজটের সংকীর্ণ রাস্তায় জায়গা পেলেই ফাঁক গলে ছুটে চলে মোটরসাইকেল। ভোলাবাসী এই আতঙ্ক থেকে রেহাই পেতে প্রশাসন ও ট্রাফিক বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

SHARE