নুরউদ্দিন আল মাসুদ।।
ভোলার মনপুরায় ১৫ বছরের এক কিশোরীকে খালার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে স্কুলের ছাদে রাতভর পালাক্রমে গণধর্ষণ করেছে। গ্রামের মোড়ল মাতাব্বররা মিমাংশার অযুহাতে মামলা করতে বাধা দেন।
ঘটনার চার দিন পর গতকাল শুক্রবার দুপুরে মনপুরা থানায় মামলা হলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তার আসামিরা হচ্ছেন মো. শাকিব (১৮), আ. করিম (১৯), জোবায়ের হোসেন (১৮) ও মো. শামীম (১৯)। আসামিদের বাড়ি উপজেলার মনপুরা ইউনিয়নে।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী কিশোরীর ভাষ্য, গত ঈদুল আজহার সময় ঢাকা থেকে ভোলার মনপুরা উপজেলার মনপুরা ইউনিয়নে খালার বাড়িতে বেড়াতে যায় ওই কিশোরী। তারপর থেকে সেখানেই বসবাস করছিল সে। ৭ সেপ্টেম্বর সোমবার রাত ১০টার দিকে কিশোরী শৌচাগারে যাওয়ার জন্য ঘুম থেকে উঠে ঘরের বাইরে বের হয়। এ সময় ওত পেতে থাকা মো. শাকিব, আ. করিম, জোবায়ের হোসেন, শামীমসহ ছয়জন কিশোরীর মুখ চেপে ধরে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যান।
পুলিশ খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে তিনজন, শুক্রবার মামলার পর একজনসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আসামিরা প্রথমে মেয়েটিকে নিয়ে যায় মনপুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত চারতলা ভবনের দোতলায়। সেখানে নিয়ে তাকে তারা ধর্ষণ করে। শেষ রাতের দিকে কিশোরীর হাত, পা ও মুখ বেঁধে ফের মোটরসাইকেলে তুলে উপজেলার আন্দিরপাড় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবনে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে ফের ধর্ষণসহ পাশবিক নির্যাতন চালায় তারা। পরে ভোরের আলো ফুটতেই মেয়েটিকে সেখানে ফেলে পালিয়ে যায় তারা। পরে মেয়েটির চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় করা মামলার বাদী ওই কিশোরীর খালা। তিনি জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের চাপে পড়ে প্রথমে স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হয়। পরে ঘটনাটি পুলিশ জানতে পারে। কিশোরীকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসল তথ্য বের হয়ে আসে। পরে মেয়েটিকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে যায়। তার জবানবন্দির সূত্র ধরে পুলিশ চারজনকে আটক করে। এখনো অজ্ঞাতনামা দুজনকে পুলিশ আটক করতে পারেনি।
মনপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন জানান, গত সোমবার কিশোরীকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ করেছে। তবে বৃহস্পতিবার পুলিশ খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে তিনজন, শুক্রবার মামলার পর একজনসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আজ শনিবার সকালে ওই কিশোরীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে।