মাসুদ রানা ভোলা জেলা দক্ষিণ প্রতিনিধি। করোনা ঝুঁকি উপেক্ষা করেও মানব সেবায় কাজ করে চলেছেন ভোলা সদর হাসপাতালের সরকারী এম্বুলেন্স চালক হানিফ। প্রানঘাতি করোনা ভাইরাসের ভয়কে উপেক্ষা করে করোনা আক্রান্ত রোগীদের জেলার একমাত্র আই সলিউশন ওয়ার্ড ভোলা সদর হাসপাতালে রাখার জন্য প্রতিদিনই ছুটে যাচ্ছেন তিনি। ভোলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে করোনা স্যাম্পল সংগ্রহ করার পর তাকেই সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে করে আনতে হয়। করোনা শুরু থেকে রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করার পর ল্যাব পর্যন্ত আনা নেওয়া তাকেই করতে হয়। যেখানে হাসপাতালের অধিকাংশ স্টাফ করোনা ওয়ার্ডে যেতে অস্বীকার করছেন সেখানে তার নিরলস প্রচেষ্টা মানব সেবার দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ হিসেবে থাকবে বলে মনে করছেন অনেকেই। জানা যায়, ভোলা সদর হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ড চালু হওয়ার পর এই ওয়ার্ড থেকে জীবন বাজি রেখে এখন পর্যন্ত নির্বিঘ্নে কাজ করছেন তিনি। হানিফ মিয়ার সাথে কথা বললে তিনি জানান, পৃথিবীতে যখন এসেছি একদিন না একদিন তো মরতেই হবে। যদি মানুষের সেবা করে মারা যাই তাহলে আল্লাহ আরো বেশি খুশি হবে। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: সিরাজ উদ্দিন স্যারের নির্দেশ মোতাবেক এখানে কাজ করে যাচ্ছি। যতদিন দায়িত্বে থাকবো ততদিন কাজ করবো। তবে এটা সত্যি আমরা এই ওয়ার্ডে কাজ করায় অনেকেই আমাদের সাথে কথা বলছে না, দেখা করছে না। সামাজিকভাবে আমাদের দূরে সরিয়ে রাখা হচ্ছে। যেদিন থেকে করণা পজিটিভ রোগীর বহন করে আসছি সেদিন থেকেই আমি নিজে একা একটি রুমে বসবাস করছি। আমার একটি শিশু সন্তান থাকার কারণে আমি বাসায় প্রবেশ করি না। যাই হোক সেটা আমাদের কোনো বিষয় না। এখন যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সেটাই করছি। লকডাউন এর মাঝামাঝি সময়ে সরকারিভাবে আমাকে বরিশালের বাউফল বদলি হয়েছিলো। লকডাউনের থাকার সেখানে যেতে আমার অনেক বেগ পেতে হয়েছে এবং হঠাৎ বদলি হওয়ার কারণে খাবার-দাবারে বেশ অসুবিধায় ছিলাম। খাবার হোটেল গুলো বন্ধ থাকায় আমি চিড়া মুড়ি খেয়ে ২০ দিনের মত ছিলাম। পরে আবার ভোলায় চলে আসি। করোনার শুরুতে সরকারিভাবে খাবারের বিল দেওয়া হতো এখন আর খাবার বিল দেওয়া হয়না। এর মধ্যে আমার নমুনাও পরীক্ষা করা হয়েছে। যেখানে করোনা নেগেটিভ এসেছে। যতদিন হাসপাতালের পরিচালক স্যার আমাকে রাখবেন ততদিন কাজ করে যাবেন বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে ভোলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: সিরাজ উদ্দিন জানান, করোনাকালীন সময় থেকে এখন পর্যন্ত ভোলা সদর হাসপাতাল অ্যাম্বুলেন্স চালক হানিফকে করোনায় আক্রান্ত রোগীকে হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে নিয়ে আসার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শুরুতে খাবারের বিল দেওয়া হয়েছে।সরকারিভাবে খাবার বিল না আসায় তাকে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।