বন্দী ৮০ হাজার, বিএনপির দাবি ৭৬ হাজারই তাদের

অনলাইন ডেস্ক: ভোলানিউজ.কম,

বিএনপির দাবি, কারাগারে যারা বন্দী তাদের মধ্যে প্রায় ৭৬ হাজার তাদের দলের নেতা-কর্মী। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অভিযোগ, বর্তমান সরকারের আমলে মোট ৯০ হাজার মামলা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে এবং এতে আসমি প্রায় ২৬ লাখ।

শনিবার সকালে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন বিএনপি নেতা। তার অভিযোগ, গত ১০ বছরে ব্যাপকভাবে হত্যা-নির্যাতনের শিকার হয়েছে তার দলের কর্মীরা। আর সরকারের শেষ সময়ের এসব মামলা নির্বাচন থেকে তাদেরকে দূরে রাখার চেষ্টা।

বিএনপি নেতার তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সাল থেকে গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট মামলা দেয়া হয়েছে ৯০ হাজার ৩৪০টি। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ২৫ লাখ ৭০ হাজার ৫৪৭ জন। আর এদের মধ্যে জেল হাজতে আছেন ৭৫ হাজার ৯২৫ জন।

কারাবন্দীর সংখ্যা নিত্যদিন উঠানামা করে। তবে সেটি ৮০ হাজারের আশেপাশেই বলে জানিয়েছেন কারা কর্তৃপক্ষ। গত ৩১ জুলাই র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ জানান, বন্দীর সংখ্যা ৮০ হাজার ৮৫ জন। অর্থাৎ মির্জা ফখরুলের দাবি অনুযায়ী বন্দীদের ৯০ শতাংশই তাদের নেতা-কর্মী।

ফখরুলের দাবি, গত ১০ বছরে তারা ব্যাপক অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এই সময়ে তাদের এক হাজার ৫১২ জনকে হত্যা হয়েছে যাদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই হত্যা করেছে ৭৮২ জনকে। মোট গুম হয়েছে এক হাজার ২০৪ জনকে পরে যাদের মধ্যে ৭৮১ জনকে গ্রেপ্তার দেখায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বর্তমানে গুমের সংখ্যাটি ৭২ জন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা গুরুতর জখম ও আহত হয়েছে ১০ হাজার ১২৬ জন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এসব ঘটনা প্রমাণ করে সরকার বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখার সম্ভাব্য সব চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা আরও একটি ভোটাবিহীন নির্বাচন করার জন্য কূটকৌশল হাতে নিয়েছে। সে কারণে আজকে সারাদেশে গায়েবি মামলার ছড়াছড়ি যা দেশের মানুষের মধ্যে উদ্ধেগ উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করেছে।’

ফখরুল বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই সরকার সব ধরনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের উদ্যোগ নেয়ার জন্য আমরা বহুবার আহ্বান জানিয়েছি। কিন্তু সরকার কোন কর্ণপাত করছেন না। তাদের উদ্দেশ্য একটাই। আরও একবার ভোটারবিহীন নির্বাচন করা, যার কারণে তারা এখন গায়েবি মামলার পথ বেছে নিয়েছে। যে মামলা থেকে মৃত ব্যক্তি পর্যন্ত রেহাই পাচ্ছে না।’

সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কি চমৎকার তাদের গণতন্ত্র তিনি সারাদিন বলছেন সুষ্ঠ ভোট হবে। এই হলো তাদের গণতন্ত্রের নমুনা।’

গত ৩০ সেপ্টেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে দেয়া সাত দফা দাবি পূরণ করে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টিরও আহ্বান জানান ফখরুল। বলেন, ‘নির্বাচনের আগে আমাদের কারাবন্দী নেত্রীকে মুক্তি দেয়া সহ-আমাদের যৌক্তিক দাবি গুলো মেনে নিলেই কেবল মাত্র সুষ্ঠ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন,মওদুদ আহমদ,মির্জা আব্বাস,গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

(আল-এম, ৬অক্টোবর-২০১৮ইং)

SHARE