রাঙ্গামাটিতে ব্রাশফায়ার নিহত ৬ আহত ২০

শংকর হোর,রাঙ্গামাটিঃ

রাঙ্গামাটির সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ার। নির্বাচনী কর্মকর্তাসহ ছয় জন নিহত। আহত হয়েছেন আরো ২০ জন। রাত নয় টায় রাঙ্গামাটির একটি পুলিশ ক্যাম্পে ব্রাশফায়ারের ঘটনা ঘটেছে। গুরুতর  আহতদের হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে।

গতকাল সন্ধ্যায় ভোটগ্রহণ শেষে ব্যালট ও নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে গাড়িতে করে উপজেলা সদরে ফিরছিলেন তারা। গাড়িটি নয়কিলো এলাকায় পৌঁছলে সন্ত্রাসীরা গাড়ি লক্ষ্য করে ব্রাশফায়ার করে। এতে ঘটনাস্থলেই ছয় জনের মৃত্যু হয়। স্থানীয়দের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে নিহতরা হলেন- প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান, সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মো. তৈয়ব, পোলিং অফিসার আল আমিন, মো. আমির হোসেন গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য (ভিডিপি) বিলকিস (৩৫) ও পথচারী মন্টু চাকমা।

নির্মম এই ঘটনায় তিনজন পুলিশ সদস্যসহ আরো অন্তত আটজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গুরুতর আহত হয়েছে বলে প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন রাঙ্গামাটির পুলিশ সুপার আলমগীর কবির। আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের সকলকে হেলিকপ্টারযোগে চট্টগ্রাম সিএমএইচ-এ পাঠানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।

এদিকে এই ঘটনায় পুরো রাঙ্গামাটি জেলায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। জেলা শহরের এই ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীরা। মিছিল থেকে নির্মম এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ।

এদিকে রাত পৌনে নয়টার সময় বাঘাইছড়ির মাচালং পুলিশ ক্যাম্পে আবারো ব্রাশ ফায়ারের ঘটনা ঘটেছে। চুক্তি বিরোধী আঞ্চলিকদলীয় সন্ত্রাসীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

এর আগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বাঘাইছড়ি উপজেলায় চার প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে পরিণতির জন্য প্রশাসনকে হুঁশিয়ার করেছিলেন। এরা হলেন- চেয়ারম্যান প্রার্থী বড়ঋষি চাকমা, তিন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমিতা চাকমা, সমীরণ চাকমা ও অমর শান্তি চাকমা। সোমবার সংবাদপত্রে পাঠানো এই চারজনের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতরাতে উলুছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খেদারমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাঘাইহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, করেঙ্গাতলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সহযোগিতায় সংস্কারপন্থি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী সুদর্শন চাকমার ‘সন্ত্রাসীরা’ ব্যালট বক্সে ব্যাপক ব্যালট ভরে রাখে। তারা অনতিবিলম্বে বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে পুনরায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছেন।

একইসঙ্গে ‘কেন্দ্র দখল করে নজিরবিহীন ভোট ডাকাতির’ নির্বাচন বাতিল করা না হলে বাঘাইছড়ি উপজেলায় যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশন ও সরকারই দায়ী থাকবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন। এই চারজন সন্তু লারমা নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সমর্থনে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন জানিয়েছেন আমাদের রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি শংকর হোর।

SHARE