ভোলায় ফেসবুকের কল্যাণে ৬ বছর পর নিখোঁজ মাকে ফিরে পেলো সন্তানরা।।

 

ভোলা প্রতিনিধি।।ভোলায় ফেসবুকের কল্যাণে হারিয়ে যাওয়া নিখোঁজ মাকে দীর্ঘ ৬ বছর পর ফিরে পেলো তার সন্তানেরা। মানসিক ভারসাম্যহীন হলেও সন্তানকে দেখে চিনতে পেরে বুকে টেনে নেন মনোয়ারা বেগম। সন্তানকে পেয়ে বুকে টেনে কান্নায় ভেঙ্গে পরেন। তিনি চরফ্যাশন উপজেলার চরমাদ্রাজ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের নাজিম উদ্দিন গ্রামের বাসিন্দা। দীর্ঘ ৬ বছর আগে তার বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। তার সন্তানেরা অনেক খোঁজাখুজি করেও তার মাকে পাননি। গত রবিবার (৭ মে) সন্ধ্যায় ভোলা সদর উপজেলার পরানগঞ্জ বাজারে একদল মানবিক যুবক রাস্তায় হাটার পথে তাকে দেখতে পান। তারা দেখেন তিনি পা খরিয়ে খরিয়ে রাস্তার পাশে হাটেন ও পা পচে গিয়ে ঝড় ঝড়িয়ে রক্ত পুঁজ পরে এবং প্রচন্ড দূগন্ধ বের হয়। তার থেকে নাম ঠিকানা জানতে চাইলে চিনি কিছু বলতে পারেননি। পরে মোঃ মমিন, রাকিব হাওলাদার, মোঃ ফিরোজ, মোঃ নয়ন, ওমর ফারুক এই মানবিক যুবকরা এ্যাম্বুলেন্স যোগে তাকে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন। এ বিষয়টি ভিডিওর মাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পরলে তাৎক্ষণিক এই নারীর চিকিৎসার জন্য যুবকদের সাথে যোগাযোগ করেন ভোলা সদর উপজেলা কর্মকর্তা ইউএনও মোঃ তৌহিদুল ইসলাম। এবং তার চিকিৎসার জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল তত্বাবধায়ক, আরএমও, হাসপাতাল সমাজসেবা অধিদপ্তরে যোগাযোগ করে তিনি সুস্থ হওয়া পর্যন্ত তার চিকিৎসা সেবা ফ্রি করে দেন।
এদিকে রাস্তায় পড়ে থাকা অজ্ঞাত নারীকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করিয়ে সর্বমহলে প্রশংসায় ভাসছেন এই মানবিক যুবকেরা। এই নারীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোলা সদর হাসপাতালে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন হাসপাতালে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য মোঃ মামুন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সার্বক্ষনিক খোঁজ খবর নিয়েছেন, ২নং ইলিশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ার হোসেন ছোটন, ইলিশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ গোলাম মোস্তফা, ভোলা ডিবি সদস্য মোঃ আরিফুল ইসলাম, কাচিয়া ইউনিয়নের কৃতি সন্তান বিশিষ্ট সমাজসেবক মোঃ রাকিব শান্ত, দৈনিক আজকের ভোলা পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক এম শাহরিয়ার জিলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সরকারি কর্মকর্তারা। এছাড়া আর্থিক সহযোগিতার প্রয়োজন হলে সকলে সহযোগিতা করবেন বলেও জানিয়েছেন।অন্যদিকে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক ভাইরাল হলে মঙ্গলবার (৯ মে) পরিবারের সন্ধান মিলে। বিকালে তার সন্তানরা আসলে দেখে তার মাকে চিনতে পারে মাও সন্তানকে চিনতে পারে। অতঃপর পরিবারের সদস্যদের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়। পরে ভোলা সদর হাসপাতাল থেকে ছারপত্র দিয়ে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতার এ্যাম্বুলেন্স যোগে চরফ্যাশন প্রেরন করা হয়েছে।উল্লেখ্য, মনোয়ারা বেগম পরিপূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার চিকিৎসা চলমান থাকবে। পরিবারের লোক পাশে থেকে তার দেখাশোনা করবে। সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসপাতাল ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে তার চিকিৎসার জন্য সার্বক্ষনিক সকল ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।

ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান

SHARE