ভোলার গ্যাস সিএনজি হয়ে যাচ্ছে গাজীপুর, ময়মনসিংহে।।

 

ডেস্ক রিপোর্ট।। দেশের একমাত্র দ্বীপ জেলা ভোলার গ্যাস মেঘনা ও তেতুলিয়া নদী পার হয়ে রাজধানী ঢাকা হয়ে গাজীপুর ও ময়মনসিংহে যাচ্ছে। সিএনজিতে (সংকুচিত প্রাকৃতিক গ্যাস) রূপান্তরিত করে সিলিন্ডারে ভরে এই গ্যাস আগ্রহী শিল্পকারখানায় সরবরাহ করা হবে। প্রাথমিকভাবে গাজীপুর ও ময়মনসিংহের ভালুকায় শিল্পকারখানায় সরাসরি বা কারখানায় স্থাপিত ক্যাপটিভ পাওয়ারে (শিল্পের নিজস্ব বিদ্যুেৎকন্দ্র) সড়কপথে বিশেষভাবে রূপান্তরিত ট্রাকে অথবা জলপথে বার্জের মাধ্যমে সিলিন্ডারগুলো পৌঁছে দেওয়া হবে।গত ১০ মে ভোলার গ্যাস সিএনজি আকারে তিতাসের শিল্প-কারখানায় সরবরাহের বিষয়ে পরিপত্র জারি করে জ্বালানি বিভাগ। এতে গ্যাসের দাম, বিভিন্ন সংস্থার মার্জিন, গ্যাস সরবরাহকারীর পালনীয় শর্তের বিষয় উল্লেখ করা হয়। সিএনজি আকারে এই গ্যাস তিতাসের আওতাধীন শিল্পকারখানায় সরবরাহ করা হবে। প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৪৭ টাকা ৬০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা সিএনজির বা শিল্প শ্রেণির জন্য গ্যাসের বিদ্যমান দামের চেয়ে বেশি। মূলত পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এই দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। গত ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া গ্যাসের বর্ধিত দর অনুসারে শিল্পে প্রতি ঘনমিটারের দাম এখন ৩০ টাকা। আর সিএনজি ফিলিং স্টেশনে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৪৩ টাকা।

ভোলার গ্যাস আনতে ব্যবস্থাপনার জন্য প্রাথমিকভাবে বেসরকারি কোম্পানি ইন্ট্রাকোর সঙ্গে চুক্তি করছে সরকার। আজ রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীতে একটি পাঁচ তারকা হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ইন্ট্রাকোর সঙ্গে ১০ বছরের চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। সরকারি কোম্পানি সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি থেকে গ্যাস কিনে তা সিএনজিতে রূপান্তরিত করে তিতাস গ্যাস কোম্পানি এলাকায় শিল্পকারখানায় সিএনজি বিক্রি করবে ইন্ট্রাকো।জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, ইন্ট্রাকোর মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ে দৈনিক ৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আনা হবে। পরে ২০ মিলিয়ন ঘনফুটে তা উন্নীত করা হবে। ময়মনসিংহের ভালুকা ও গাজীপুরে জ্বালানিসংকটে থাকা কারখানাগুলো গ্যাস সরবরাহে অগ্রাধিকার পাবে। দৈনিক ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সিএনজিতে পরিণত করে পরিবহনের জন্য ৬০টি কম্প্রেসর ও ২৩৮টি ক্যাসকেড ট্যাংকার প্রয়োজন। ইন্ট্রাকো বিশেষভাবে রূপান্তরিত ট্রাকে সিলিন্ডার বসিয়ে তাতে করে সিএনজি আনবে।ভোলার গ্যাস সিএনজি আকারে পরিবহনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। কমিটি গত ৩১ অক্টোবর তাদের প্রতিবেদন পেট্রোবাংলায় জমা দেয়। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে ভোলায় দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৮৬ এমএমসিএফডি। ভোলার গ্যাসক্ষেত্রের দৈনিক উত্পাদনক্ষমতা ১২০ এমএমসিএফডি। উদ্বৃত্ত গ্যাসের পরিমাণ ৩৪ এমএমসিএফডি।সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির ঐ প্রতিবেদনে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৫১ টাকা ১২ পয়সা প্রস্তাব করা হয়েছিল। পরে পর্যালোচনা করে প্রতি ঘনমিটারের দাম ৪৭ টাকা ৬০ পয়সায় চূড়ান্ত করেছে জ্বালানি বিভাগ ও পেট্রোবাংলা। এই খুচরা মূল্যহারের মধ্যে প্রতি ঘনমিটার ফিড গ্যাসের দাম ধরা হয়েছে ১৭ টাকা; সিএনজি স্টেশনগুলোর ক্ষেত্রে যা ৩৫ টাকা। এই ১৭ টাকার মধ্যে বাপেক্স, পেট্রোবাংলা, সুন্দরবন, আরপিজিসিএলসহ বিভিন্ন কোম্পানির মার্জিন, সঞ্চালন ও বিতরণ মাশুল, গ্যাস উন্নয়ন তহবিল, জ্বালানি নিরাপত্তা তহবিল ও ভ্যাট রয়েছে। সিএনজি স্টেশনগুলো প্রতি ঘনমিটার গ্যাস বিক্রি করে আট টাকা মার্জিন পায়। ভোলার গ্যাস আনতে ইন্ট্রাকো পাবে ৩০ টাকা ৬০ পয়সা। এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার ব্যাখ্যা হচ্ছে, সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে ভোলা থেকে ঢাকা পর্যন্ত ২৩০-২৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে গ্যাস আনতে হবে। তাই তার মার্জিন বেশি দেওয়া হচ্ছে।

ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান

SHARE