প্রবাসী কাসেম এগিয়ে আসলেও, আসেনি দেশের সম্পদশালীরা।

ডেস্ক: ভোলানিউজ.কম- আল-আমিন এম তাওহীদ,

দুটি চারটি টাকার জন্য দিনরাত ২৪ঘন্টাই রাস্তার পাশে সমাজের কিছু অসহায় মা-বাবা এবং পথশিশুরা।প্রতিদিন কত খাবার নষ্ট হচ্ছে তবুও বিবেকে টান দেয়নি ‘‘ফেলে না দিয়ে কারো মুখে দেই’’। সমাজে অনেক অর্থ-সম্পাদশালী মানুষ আছেন। যা তাদের কাছে ২লাক্ষ টাকা আর্থিক সহযোগিতা করা কোন ব্যাপার না। কোন গরিবকে প্রতিটি সম্পাদশালী পরিবার কিছু আর্থিক সাহায্য করলে এদেশে গরিব থাকেনা। কিন্তু যার যত বেশি, তার তত চাওয়া বেশি। আমাদের সমাজে এক শ্রেণী মানুষ আছে বাড়িঘর সবকিছু হারিয়ে পথহারা পথিক। রাত কিংবা দিন কাটে ওই সড়কে পাশে। দুটি একটি টাকা পেলেও অনেকটা শান্তি।এদেরকে সাহায্য করতে দেখা যাচ্ছেনা কোন জনপ্রতিনিধি কিংবা সম্পাদশালীদের। তারা অনেক টাকা পয়সার মালিক হলেও,হয়নি বিবেক সহানুভুতির আদালত।

আমরা সমাজের প্রভাবশালীরা এগিয়ে না আসলেও, আসছে এগিয়ে প্রবাসীরা। প্রবাসিরা কতটা কষ্ট করে দুটি পয়সা আয় করে থাকেন তা বাস্তব এ দেখলে বুজা যায় সেই কষ্ট আর যন্ত্রনা কি?। তবুও দেশের অসহায়দের চোখে পড়লে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে দুর্বার গতিবে। সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুক কিংবা বিকাশের মাধ্যমে বেশিরভাগ অসহায় মানুষের সেবা করেন প্রবাসিরা। সাহায্যর জন্য টনক নড়েনা দেশের কোটি কোটি টাকার মালিকদের।দুটি পয়সা আয় করে, মাথার ঘাম পায় ফেলে সহা্নুভুতি আর ভালবাসার জন্য এগিয়ে যায় প্রবাসিরা। আর আমরা টাকা ওয়ালারা এসরি রুমে বসে বাতাস খাই।

ভোলার উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নের সৌদি প্রবাসী আবুল কাসম সুলতান। তার জীবন চলছে সৌদির মরুভুমিতে। অগ্নিঝড়া আগুনের মত গরম দেশ সৌদি আরব। দুটি টাকা আয় করে কিছু টাকা বিলিয়ে দিতে চান গরিব অসহায়কে।গতকাল সোমবার সামাজিক যোগাযোগে একটি পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে ‘‘অসুস্থ অসহায় মায়ের পাশে দুইপথশিশু’’ দেখা যায়নি কোন প্রভাবশালীকে! এমন স্টাট্যাস দেখে এই প্রবাসী তার ফেসবুক আইডি স্টাট্যাস দিয়েছিলেন- আমি সাহায্য করবো এই অসহায় ‘’মা’’ এবং দুই পথশিশুকে  যদি এর সন্ধান কেউ পেয়ে থাকেন দয়া করে আমার সাথে যোগাযোগ করবেন।

আসলেই আমরা আজ কোথায় বসবাস করছি? অনেক দুর থেকে একজন প্রবাসী এগিয়ে আসতে পারলে, অসহায়দের চোখের সামনে দেখা, তবুও আমরা কেন সাহায্য করছিনা আমরা ব্যক্তিরা পারিনা?।টাকা পয়সা আর অর্থ সম্পদ দিয়ে কি হবে? এগুলো কে খাবে? আজ মারা যাবেন কাল সব শেষ!! এর নাম জগত।

এদিকে দৈনিক মানব জমিন পত্রিকায় কর্মরত আছেন সুজয় দাস নামের একজন ভাই লিখেছেন-

বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরের তালিকায় ঢাকা। ‘ঢাকায় টাকা উড়ে’; কিন্তু এ উড়ন্ত টাকা যারা ধরতে অক্ষম, তাদের প্রতিটি দিন এক একটি নির্মম গল্পকেও হার মানায়। এখানে কংক্রিটের দেয়ালে যেভাবে চাপা পড়ে যায় সকালের সোনা রোদ, সেভাবেই চাপা পড়ে থাকে অভাবি অসহায় মানুষের হাহাকার।
এই ইট-কাঠ-পাথরের শহরে বিত্তশালীদের বিলাসী জীবনের ঝলকানিতে যেমন চোখ ধাঁধিয়ে যায়, তেমনি নিরণ্ণ ছ্ন্নিমূলদের অসহায়
জীবনের করুণ কাহিনী ছুটন্ত মানুষকে
থমকে দাঁড়াতে বাধ্য করে। অনেক সময়
হয়তো পেছনে তাকানোর ফুরসত টুকুও
মেলে না। কিন্তু চোখে আটকে থাকে এমন কিছু দৃশ্যপট, যা আপনাকে বারবার ভাবতে বাধ্য করবে- জীবনের মানে
কী? বিলাসের ঝলকানিই কি জীবন,
নাকি দুর্বল হাতের অশ্রুসজল চোখের
অসহায় লড়াইটাই জীবন?

শনিবার সোবহানবাগ মসজিদ থেকে
২০০ গজ দক্ষিণের ফুটপাতে এক ছিন্নমূল
অসহায় মাকে বাঁচাতে তার দুই শিশুসন্তানের লড়াইয়ের দৃশ্য, বিবেককে নাড়া দিয়ে ওঠে। ছবিতে দেখা যায়, একজন অসুস্থ মা ফুটপাতে শুয়ে কাতরাচ্ছেন। পাশে তার দুই অবুঝ সন্তান। মাতৃসেবায় ব্যস্ত এ দুই ছোট্ট শিশু। মাথায় পানি ঢেলে মায়ের জ্বর প্রশমন করার চেষ্টা করছে বড় ছেলেটি। পাশে কারা যেন রুটি, কলা রেখে গেছে। পানি রাখার জন্য কোনো পাত্রও নেই তাদের। কুড়িয়ে পাওয়া মিনারেল ওয়াটারের বোতলেই কাজ চালিয়ে নিচ্ছে শিশুটি।
ছোট ছেলেটি আর কিছু করার ক্ষমতা
নেই দেখে বিদ্যুতের একটি খুঁটিতে
মাথা ঠেকিয়ে রেখে তার অসহায়ত্ব
প্রকাশ করছে।

তবে মানবতা হারিয়ে যায় নি, সেই মা এখন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।
জয় হোক মানবতার…

(আল-আমিন এম তাওহীদ, ৯জুলাই-২০১৮ই)

SHARE