খানসামায় ভরা বর্ষা মৌসুমেও খরা; বৃষ্টির অভাবে দুশ্চিন্তায় আমন চাষিরা।।

 

জসিম উদ্দিন;খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ-দিনাজপুরের খানসামায় বৃষ্টির ভরা মৌসুমেও বৃষ্টির দেখা নেই। আমন চাষ নিয়ে বিপাকে রয়েছে উপজেলার চাষিরা। প্রচণ্ড খরায় মাঠ পুড়ে চৌচির হয়ে যাচ্ছে! এদিকে দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় আমন খেতে সময়মতো হাল দিতে পারছেন না কৃষকেরা। দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। এমনকি রোদের তাপে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না কেউ। তীব্র তাপে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। খাঁ খাঁ করছে ফসলি মাঠ। অন্যদিকে পাট জাগ দেয়ার সময় হয়েছে। কিন্তু কোথাও পানি না থাকায় পাট চাষিদের কপালেও পড়েছে চিন্তার ভাজ।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, খানসামা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৮৬২ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। যদি বৃষ্টি না হয় তাহলে পাট চাষীদের ভোগান্তি পোহাতে হবে।৬ ঋতুর এই বাংলাদেশে আষাঢ় ও শ্রাবণ মাস বর্ষাকাল। বর্ষাকালে ফসলি জমি থাকে পানিতে টইটম্বুর। আর জমির এই পানিকে কাজে লাগিয়ে আমন চাষ করেন কৃষক। কিন্তু এবার প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম বৃষ্টি হওয়ায় ও প্রচন্ড খরায় আমন ধান চাষে পিছিয়ে যাওয়ায় উপজেলা কৃষি বিভাগের নির্ধারিত লক্ষ্য মাত্রার এক চতুর্থাংশও এখন পর্যন্ত অর্জিত হয়নি। ফলে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে চাষীদের। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। বর্ষায় সেচ বিহীন কম খরচে ধান চাষ করে লাভের স্বপ্ন দেখে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের কৃষকরা । কিন্ত এ বছর চলতি মৌসুমে প্রয়োজন মত বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকের লাভের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। চিন্তা বাড়ছে তাদের। জমি শুকিয়ে মাটি ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে । শুকিয়ে যাচ্ছে লাগানো ধান গাছ।এমনকি প্রয়োজন মতো বৃষ্টি না হওয়ায় অধিকাংশ জমিতে এখনও ধানের চারা রোপণই করতে পারেননি কৃষকরা।এই পরিস্থিতিতে নিরুপায় হয়ে চলতি আমন মৌসুমে চারা রোপণ ও আউশ ধানক্ষেত রক্ষায় শ্যালো মেশিন কিংবা বিদ্যূৎ চালিত সেচ পাম্প দিয়ে জমিতে সেচ দিচ্ছেন অনেক কৃষক।উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, চলতি রোপা আমন মৌসুমে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ১৩হাজার ৭৬৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এখনও পর্যন্ত ২ হাজার ৯৬৫ হেক্টর জমিতে ধান রোপণ করা হয়েছে। শুধুমাত্র বৃষ্টি না হওয়ার কারণে ধান রোপণ পিছিয়ে যাচ্ছে।খামার পাড়া ইউনিয়নের নেউলা গ্রামের কৃষক আজিজুল হক (৪৫) জানান, এভাবেই যদি খরা চলতে থাকলে,ইরি ধানের মত করেই জমিতে সেচ দিতে হবে। তাহলে ধান চাষ করে লোকসানের মুখ দেখতে হবে।আঙ্গারপাড়া ইউনিয়নের ছাতিয়ানগড় গ্রামের শাহজালাল নামের আরেক কৃষক জানান, গত ১০/১২ দিন হতে বৃষ্টির দেখা নেই এদিকে আমনের চারা রোপণের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। তাই সঠিক বয়সের চারা রোপণের লক্ষে জমিতে সেচ দিয়ে চারা রোপণ করছি।এ ব্যাপারে খানসামা উপজেলা কৃষি অফিসার বাসুদেব রায় বলেন ‘খরার কারণে কৃষকেরা মাঠে হাল চাষ করতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে কয়েকদিনের মধ্যেই এই সমস্যার সমাধান হতে পারে বলে ইতোমধ্যেই জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

 

SHARE