কক্সবাজারে কোস্ট ট্রাস্টের মাধ্যমে কৃষকদের ইতিবাচক পরিবর্তন

বিশেষ প্রতিনিধি :

বিশ্ব যখন করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে স্তব্ধ। তখন লকডাউনের মাঝে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে ব্যস্ত কৃষক। কৃষি আমাদের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। আবহমান কাল ধরে আমাদের জীবন – জীবিকা, কর্মসংস্থান,শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য আবর্তিত হচ্ছে কৃষিকে ঘিরে। এজন্য বলা হয় কৃষির উন্নয়ন মানেই দেশের উন্নয়ন। দেশ গড়ার আদর্শ সৈনিক কৃষক-কৃষাণী,কৃষিকাজে নিবেদিত প্রাণ সরকারি, বেসরকারি কৃষি কর্মকর্তা,কৃষি কর্মী,গবেষক, বিজ্ঞানী ও প্রতিষ্ঠান। বর্তমান সময়োপযোগী কৃষি প্রযুক্তি কৃষকের দোরগোড়ায় পৌছানো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কক্সবাজার জেলায় কোস্ট ট্রাস্ট Dry-fish and Aquaculture for Wellbeing and Nutrition (DAWN) project আওয়তায় পুকুর ও বসতবাড়ী বা পুকুর পাড়ে সবজি চাষ। DAWN প্রকল্পটি কক্সবাজার জেলার ৩ টি উপজেলায় কক্সবাজার সদর,টেকনাফ ও পেকুয়া উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই প্রকল্পের আওয়তায় ৫০০ শুটকি উৎপাদনকারী সদস্য এবং ১৩০০ কার্পজাতীয় মাছ উৎপাদনকারী সদস্য আছে। নিরাপদ ও বিষমুক্ত শুটকি উৎপাদনের লক্ষ্যে শুটকি উৎপাদনকারী সদস্যদের মাঝে ২৫ টি মাচা ও ২৫ টি ড্রায়ার দেওয়া হয়েছে। কার্পজাতীয় মাছ উৎপাদনকারী সদস্যেরা প্রত্যেকে কাতলা রুই মৃগেল তেলাপিয়া ও মলা মাছ পেয়েছেন। আরও পেয়েছেন মিষ্টিকুমড়ার বীজ,লাউয়ের বীজ,পুইশাকের বীজ, লেবুর চারা,পেঁপের চারা ও মিষ্টিআলুর শাকের লতা । আগে সবাই সনাতন পদ্ধতিতে মাছ ও সবজি চাষ করতো। কোস্ট ট্রাস্টের DAWN প্রকল্পের মরাফতে সবাই মাছ চাষ, সবজি চাষ, পুষ্টি ও জেন্ডারের উপর ৮ টি করে প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। তাদের ভিতর অনেক পরিবর্তন দেখা গিয়েছে। তারা আগে বসতবাড়ির আঙ্গিনায় বা পুকুর পাড়ে তেমন কেউ সবজি লাগাতো না। প্রশিক্ষণ পাওয়ার পর তারা সবাই পুকুর পাড়ে বা বসত বাড়ির আঙ্গিনায় সবজি চাষ করে। সরে জমিনে মাঠ পরিদর্শন করে আজ দেখাগেছে আগে কোস্ট ট্রাস্টের DAWN প্রকল্পের মাধ্যমে যে সবজির বীজ দেওয়া হয়েছিলো সেই বীজ থেকে সবজি উৎপাদনের পর আবার নিজ উদ্যোগে বীজ ক্রয়করে বীজ বপন করেছেন। সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার, কৃত্রিম পরাগায়ন এবং জৈব সার, জেব কীটনাশক ব্যবহারের ফলে তাদের ভিতর ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। আগে সবাই সনাতন পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতো। এখন সবাই আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে যেমন পুকুরের তলদেশে পচাকাদা উঠিয়ে ফেলা, পুকুরের তলদেশে রোদে শুকানো, শতক হারে চুন প্রয়োগ, প্রাকৃতিক খাবার তৈরীর জন্য সার প্রয়োগ, প্রকৃতিক খাবার পরীক্ষার জন্য হাত দ্বারা, গ্লাস দ্বারা, সেক্কি ডিক্স ব্যবহারের মাধ্যমে তারা বলতে পারে পুকুরের পানিতে খাবারের অভাব আছে কি নেই। পুকুরে হররা টানা। স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার। টিপিট্যপ ব্যবহার, খাদ্যের পুষ্টি গুণাগুন মেনে খাবার খাওয়া তাদের নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত হতে চলেছে । সার্বিক সহযোগিতায় ফিড দ্যা ফিউচার বাংলাদেশ অ্যকোয়াকালচার অ্যন্ড নিউট্রিশন অ্যক্টিভিটি প্রকল্পটি মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নে কোস্ট ট্রাস্ট

তথ্য সংগ্রহে প্রদানে সহযোগিতা করেছেন মোঃ তরিকুল ইসলাম,উপজেলা নিউট্রিশন অ্যান্ড অ্যকোয়াকালচার অফিসার, কক্সবাজার।

SHARE