“আমি সেই সময়ের কথা বলছি”–এম.ফারুকুর রহমান

ভোলা নিউজ ডেস্কঃ

অধ্যক্ষ এম ফারুকুর রহমান। লেখক, সাহিত্যিক, নাট্যকার সব ছাপিয়ে বড় পরিচয় একজন নিবেদিত প্রাণ শিক্ষা গুরু। শিক্ষার আলো জ্বালিয়েছেন আলো বঞ্চিত সদর উত্তরের জনপদে। ভোলা প্রেসক্লাবের সাবেক এ সভাপতি তার ফেইজবুকে লিখেছেন ভোলার মানুষের প্রিয় এক ডাক্তারকে নিয়ে। ভোলা নিউজের পাঠকদের জন্য তাঁর লেখাটি তুলে ধরলাম।

“আমি সেই সময়ের কথা বলছি”
ভোলা মিউনিসিপালিটির ওয়েস্টার্ন পাড়ায় তাঁর নিবাস ছিল। নাম তার “ডাঃ আবদুল মন্নান”।
কেন যেন তার কার্যকলাপ কথাবার্তা গুলো বর্তমান প্রজন্মকে জানানো প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেছি।
তিনি পাকিন্তান এবং স্বাধীন বাংলাদেশ মিলিয়ে তিন বার পৌর সভার কমিশনার নির্বাচিত হয়েছিলেন। এটি তাঁর বড় পরিচয় নয়। তার যেটা মানুষের দৃষ্টি অাকর্ষন করেছে সেটা হলো প্রতিটি মানুষকে ভালবাসতে জানা। তিনি কোন শ্রেনী বিশেষ কে ভালবাসতেন তা নয়৷ সকল মানুষকে ভালবাসতেন। ডাঃ হিসেবে গরিব রোগিদের কাছে সে ছিল প্রচন্ড রকমের জনপ্রিয়। শুনলেই চলে যেতেন গ্রামের কোন এক দরিদ্র রোগির বাড়িতে। পয়সা নেওয়া তো দুরের কথা, বরং উল্টো দিয়ে অাসতেন রোগিকে ঔষধ পথ্য কিনবার জন্যে। ঐ বাড়িতে বিকাল বেলা ডাঃ সাহেব হঠাৎ গিয়ে হাজির হতেন৷
শুধু দরিদ্র বলছি কেন? বড়দের বাড়িতেও তিনি এইভাবে ছুটে যেতেন৷ রাস্তা দিয়ে যে কোন মানুষকে যাওয়ার সময় সালাম-অাদাব দিতেন। তৎকালীন পৌরবাসীরা তো বটেই গ্রামের লোকজন পর্যন্ত ” ডাঃ অাবদুল মন্নান’কে ” একজন মিষ্ট ভাষি হিসাবে জানতেন। সদা হাস্যময় শহর ঘুরে বেড়াতেন একটি সাইকেলে। কেমন অাছেন বা কেমন আছো? জিজ্ঞেস করতেন বড়দের যেমন ছোটদেরও তেমন। অতন্ত সাদামাটা চলাফেরা। যে কোন ব্যাপারে যে কেউ ডেকে পাঠাতেন, তাৎখনিক ভাবে চলে যেতেন সেখানে৷ বিবদমান দলগুলোর ভেতর সালিশ করতে গেলে তিনি প্রথমেই শর্ত অারোপ করতেন এই বলে যে সালিশ মানতে হবে, এমন কথা দিলে সালিশ করবো। যেহেতু, ডাঃ সাহেব ন্যায় বিচার করেন সেই জন্যে দুই পক্ষই রাজি হয়ে যেতেন৷ এবং হতো ও তা।
এই মহান পুরুষটি ১৯১৭ সালের মে মাসের ১৫ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন৷
এবং মৃত্যু বরন করেন ১২ই অক্টোবর ২০০১ সালে।
ডাঃ সাহেব অাজ অার অামাদের মধ্যে নেই! কিন্তুু ভোলার প্রবিন ব্যাক্তিরা তাঁকে মনে রেখেছে আজও।
ডাঃ সাহেবের বড় ছেলে হারুন-অর-রশীদ দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এবং ছোট ছেলে মোহাম্মদ শাহ্-নেওয়াজ কানাডা প্রবাসী ।
(সময় সুযোগ হলে শহরের আরো দুই জন সমাজ সেবক স্বর্গীয় ডাঃ প্রহ্লাদ চঁন্দ্র রায় ও স্বর্গীয় অতুল চঁন্দ্র সাহাকে আপনাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিবো)

SHARE