আফগানিস্তানে দমনপীড়নের কড়া নিন্দা জাতিসংঘের

ভোলা নিউজ ডেস্ক ঃ হত্যাকাণ্ড এবং বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে দমনপীড়ন চালানোয় তালেবানদের বিরুদ্ধে কড়া নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ। তারা বলেছে, সম্প্রতি বিক্ষোভকারীদের চারজনকে হত্যা করেছে তালেবানরা। গত ১৫ই আগস্ট কাবুলের পতন হওয়ার পর থেকে আফগানিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলন, বিক্ষোভ হচ্ছে। বিশেষ করে নারী অধিকারের প্রতি সম্মান এবং অধিকতর স্বাধীনতার দাবিতে এই বিক্ষোভ জোরালো হয়েছে। কিন্তু তার জবাবে তালেবান যোদ্ধারা বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জ, চাবুক এবং সরাসরি গুলি চালিয়েছে। এক রিপোর্টে এসব কথা বলেছে জাতিসংঘ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনারের এক মুখপাত্র বিবৃতিতে বলেছেন, যেসব মানুষ তাদের অধিকারের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করছেন তাদের বিরুদ্ধে শক্তি ব্যবহার এবং খেয়ালখুশি মতো আটক করার ধারা অবিলম্বে বন্ধ করতে তালেবানদের প্রতি আহ্বান জানাই আমরা। এসব খবর সংগ্রহ করতে যাওয়া সাংবাদিকদের বিরুদ্ধেও একই শক্তি ব্যবহার বন্ধের আহ্বান জানাই। উল্লেখ্য, তালেবান যোদ্ধারা আগস্টে পুরো আফগানিস্তানে ছড়িয়ে পড়ে। তারা দখল করে নেয় প্রাদেশিক রাজধানী এবং দেশের রাজধানী কাবুল। এরপরেই কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আকাশপথে উদ্ধার অভিযান চালায় যুক্তরাষ্ট্র। তারা নির্ধারিত সময়সীমা ৩১ শে আগস্টের মধ্যে কমপক্ষে এক লাখ ২০ হাজার মানুষকে উদ্ধার করে। ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রবাহিনী আফগানিস্তানে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে। তা টিকে থাকে প্রায় দুই দশক। এ সময়ে আফগানিস্তানে কি পরিমাণ সামরিক, বেসামরিক মানুষের প্রাণ ঝরেছে তার কোনো ইয়ত্তা নেই। আজ শনিবার ৯/১১ হামলার ২০তম বার্ষিকী পালন করছে যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে আফগানিস্তানে ক্ষমতায় ফিরে এসেছে সেই তালেবানরা। তবে এবার তারা নিজেদের পরিবর্তন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। নারীদের অধিকতর অধিকার নিশ্চিত করার কথা বলেছে। দৃশ্যত, এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি। পক্ষান্তরে তাদের দমনপীড়নের বিষয়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়া সরব হয়ে উঠেছে।


শুক্রবার বিক্ষোভকারীদের একটি সংবাদ সম্মেলন ছিল। তাতে দমনপীড়ন চালানোর কারণে তালেবানদের কড়া সমালোচনা করেছেন জাতিসংঘের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি। তিনি বলেছেন, ১৫ই আগস্ট থেকে আফগানিস্তানে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। তা ক্রমশ বাড়ছে। কিন্তু বুধবার থেকে অননুমোদিত সমাবেশ নিষিদ্ধ করে তালেবানরা। এর পরের দিনই বৃহস্পতিবার টেলিযোগাযোগ কোম্পানিগুলোকে কাবুলে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। রাভিনা শামসাদানি বলেছেন, এই ভয়াবহ অনিশ্চিত সময়ে রাজপথের আফগান নারী এবং পুরুষদের কথা শোনা খুবই জরুরি তালেবানদের জন্য। বিবৃতিতে সম্প্রতি একটি বালকসহ কমপক্ষে চারজনের মৃত্যু এবং বিক্ষোভকারীদের সহিংসতার সঙ্গে ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। এতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতার সমালোচনা করা হয়েছে। এ সপ্তাহে বিবিসির কাছে সাংবাদিকরা বলেছেন- তালেবানরা তাদেরকে প্রহার করেছে। আটক করেছে। যখনই তারা বিক্ষোভের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়েছেন, তখনই তাদেরকে বেত্রাঘাত করা হয়েছে। আফগানিস্তানে তালেবানদের ক্ষমতা দখল নিয়ে যখন ক্রমশ উদ্বেগ বাড়ছে তখনই প্রকাশ করা হয়েছে জাতিসংঘের রিপোর্ট। শুক্রবার জাতিসংঘের খাদ্য বিষয়ক কর্মসূচি ডব্লিউএফপি বলেছে, দেশটির শতকরা ৯৩ ভাগ বাড়ির মানুষ পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছেন না। প্রচণ্ড খরার কারণে সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। এই খরার কারণে শতকরা প্রায় ৪০ ভাগ গমের উৎপাদন নষ্ট হচ্ছে। ওদিকে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল রিপোর্ট করেছে, সাহায্যকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে যে, দেশটির পুরো জনগোষ্ঠী কয়েক মাসের মধ্যে দারিদ্র্যে নিপতিত হবে। ইউনেস্কো সতর্কতা দিয়েছে। তারা বলেছে, গত দুই দশকে আফগানিস্তানের শিশুদের, বিশেষ করে বালিকাদের শিক্ষায় প্রভূত উন্নতি হয়েছে। কিন্তু শিক্ষায় প্রজন্মগত বিপর্যয় দেখা দেয়ার মুখোমুখি আফগানিস্তান

SHARE